রাহুল গান্ধীর লোকসভা কেন্দ্র ওয়েনাড়ে ইতিমধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে দেশের সাবেক কমিউনিস্ট পার্টি। সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী অ্যানি রাজাকে প্রার্থী করেছে তারা। তার পর সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য তথা দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটের স্ত্রী বৃন্দা কারাট সরাসরি রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেসকে বার্তা দিতে চাইলেন।
বৃন্দা বলেছেন, ‘‘অ্যানি রাজা মহিলা আন্দোলনের নেত্রী। সিপিআই তাঁকে প্রার্থী হিসাবে ওয়েনাড়ে দাঁড় করিয়েছে। তিনি কেরলের বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।’’ পাশপাশিই বৃন্দা বলেছেন, ‘‘এক দিকে কংগ্রেস বলছে তাদের লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে। আর কেরলে তারা গিয়ে বামেদের বিরুদ্ধে লড়ছে, তা কী করে হয়। রাহুল ওই আসনে লড়বেন কি না তা আরও এক বার ভেবে দেখা উচিত।’’
কেরলে এমনিতে বামেদের সঙ্গে মূল লড়াই কংগ্রেসেরই। সেখানে বিজেপি খুব একটা পোক্ত নয়। ফলে রাজ্যের বাস্তবতার নিরিখে সেখানে মূল লড়াই বাম এবং কংগ্রেসের মধ্যেই। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, বৃন্দা চাপ তৈরির জন্যই এই কথা বলেছেন। তবে যে যুক্তি তিনি দিয়েছেন তার কতটা সারবত্তা রয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে অনেকের।
রাজনৈতিক মহলের অনেকের বক্তব্য, বৃন্দা যে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের অভিমুখের কথা বলছেন তা যদি মুখ্য হয় তা হলে বাংলাতেও সিপিএমের উচিত তৃণমূলকে সমর্থন করা। কিন্তু তা কি হবে? বাংলার বাস্তবতায় সিপিএম জানিয়েছে তাদের লড়াই তৃণমূল, বিজেপি উভয়ের বিরুদ্ধে। ফলে বৃন্দা কেরলের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের জন্য যে যুক্তি দিচ্ছেন তাতে খারিজ হয়ে যাচ্ছে আলিমুদ্দিনের লাইনও। বস্তুত, সর্বভারতীয় সিপিএমেরও ঘোষিত অবস্থান রাজ্যের বাস্তবতা অনুযায়ী ‘ইন্ডিয়া’ শরিকদের মধ্যে আসন সমঝোতা হবে। অর্থাৎ, বাংলায় কংগ্রেসকে পাশে পাওয়ার জন্য চাতকের মতো অপেক্ষা করতে হবে সিপিএমকে। আবার কেরলে লড়াই তাদের।
এই ওয়েনাড়ে সারা বছর কংগ্রেস ও সিপিএমের সংঘাত লেগে থাকে। বছর দেড়েক আগে রাহুলের সংসদীয় অফিসে বেনজির হামলা চালিয়েছিল সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। যার নিন্দা করতে হয়েছিল সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকেও। মনে করা হচ্ছে, আগেভাগে প্রার্থী ঘোষণা করে বামেরা আসলে কংগ্রেসের উপর চাপ তৈরি করতে চেয়েছে কেরলে। বিশেষত ওয়েনাড়ে অ্যানিকে প্রার্থী করা অর্থবহ বলেই মনে করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত রাহুল কী করেন সেটাই দেখার।