c682b303 5701 41b2 b471 322bd0bb7b41 696x391 1

আদালতের নির্দেশের মান্যতা না দেওয়ার এবার ত্রিপুরা চটকল শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক ধনমনি সিংহ এবং পেনশনার্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি তরুন কুমার চক্রবর্তী জুটমিল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে- যতক্ষন সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সমস্ত প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়া হবে না, ততক্ষন তারা টাকা নেবেন না। রবিবার আগরতলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান ত্রিপুরা চটকল শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক ধনমনি সিংহ।

 তিনি বলেন, ত্রিপুরা জুটমিলের সকল স্তরের শ্রমিক-কর্মচারী ও পেনশনাররা দীর্ঘ আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে, আইনগত অধিকারে প্রাপ্য বেতন-ভাতা অন্যান্য ৩২ টি সরকারী অধিগৃহীত সংস্থার ন্যায় চতুর্থ বেতনক্রমের সুপারিশ মোতাবেক ১৯৯৬ সালের ১ জানুয়ারী থেকে কার্য্যকর করার দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবি আদায়েও সক্ষম হয়েছে। কিন্তু বেতন, ভাতা বাতিত ই পি এফের উভয় শেয়ার গ্রেচুয়িটি, লিভ সেলারী ইত্যাদি সমস্ত সুবিধাভোগীগন পেয়ে যাবেন। জুটমিল কর্তৃপক্ষ তাদের ২০৮ নং বোর্ড সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহন করে উক্ত ন্যায্য প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের নিকট পেশ করেছিল। পরবর্তীকালে বিপরীত পথে হাটতে শুরু করেন তারা। তারপর রাজ্যের উচ্চ আদালতে দায়ের করা হয় মামলায়, ঐ বেতন-ভাতা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য বিচারপতি অজয় রাস্তোগী ছয় মাসের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট রায় প্রদান করেন।

কিন্তু সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ইন্দ্রজিৎ মহান্তি, সত্য গোপাল চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের উচ্চ আদালতের খন্ডপীঠে বিধিসম্মত অধিকারে প্রাপ্য না দেওয়ার লক্ষ্যে রিট আপিল মামলা করেন। কিন্তু তারা ব্যর্থ হন। পরে গত ২০২২ সালে ২১ সেপ্টেম্বর পূর্ববর্তী রায় বহালের আদেশ জারি করেন। এহেন অবস্থায়, সম্প্রতি জুটমিল কর্মচারিরা ত্রিপুরার উচ্চ আদালতে, আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করতে বাধ্য হয়।

এই মামলা চলাকালীন অবস্থাতেই সংশ্লিষ্ট প্রতিপক্ষ জে কে মহেশ্বরী এবং কে ভি বিশ্বনাথন বিচারপতিদের সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের খন্ডপীঠে দাখিলকৃত নিষ্ফলা স্পেশাল লিভ পিটিশনটি বিগত বছর ৪ সেপ্টেম্বর পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়ে ত্রিপুরা উচ্চ আদালতের রায়কে বহাল রাখেন। খন্ডপীঠের বিচারপতিদ্বয়ের রায়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিপক্ষকে সুনিদিষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে সুপ্রীম কোর্টের পূর্ববর্তী আপিল মামলা প্রদত্ত রায়ের ২ নং অনুচ্ছেদে নিদৃষ্ট আদেশ অনুযায়ী ২০১১ সালের ৮ এপ্রিল থেকে ৬ শতাংশ সুদ সহ আগামী ৪ মাস এবং চলতি বছর ৩ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত পাওনা মিটিয়ে দিতে, অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সুপ্রীম কোর্টের রায় রক্ষা করতে পারে‌ নি।

এতে বোঝা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাপ্য মিটিয়ে না দেওয়ার বদ্-উদ্দেশ্যেই কাল বিলম্বের প্রক্রিয়া করে চলেছে। তাই এই অবস্থার আঁচ পেয়ে যৌথ কমিটির কনভেনর তথা ত্রিপুরা চটকল শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক ধনমনি সিংহ এবং পেনশনার্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি তরুন কুমার চক্রবর্তী জুটমিল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে- যতক্ষন সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সমস্ত প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়া হবে না, ততক্ষন তারা টাকা নেবেন না। তাই দাবি করা হচ্ছে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বিভাজন ও বিভেদ সৃষ্টির কূট কৌশল পরিহার করে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সমস্ত প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়া, প্রাপ্য টাকা প্রদানের তালিকা প্রকাশ করার জন্য।