যাবতীয় হিসাব কষে ভারতীয় বাজারে প্রবেশের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে ইলন মাস্কের সংস্থা টেসলা। সব কিছু ঠিক থাকলে বছরশেষের আগেই জার্মানি থেকে ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ি রফতানি শুরু করতে পারে তারা। আমেরিকা থেকে টেসলার একটি দল শীঘ্রই বৈদ্যুতিক গাড়ির ২০০-৩০০ কোটি ডলারের কারখানা তৈরির জমি খুঁজতে ভারতে আসবে বলেও খবর। আর তা নিয়ে তৎপরতা বেড়েছে একাধিক রাজ্যের।
বৈদ্যুতিক যানবাহন তৈরির সংস্থাকে নিজেদের রাজ্যে আনতে ‘লড়াই’য়ে নেমেছে কয়েকটি রাজ্যের সরকার। সূত্রের খবর, টেসলাকে নিজেদের ঘরে আনার দৌড়ে প্রথমেই রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাত। দৌড়ে এর পরেই রয়েছে তামিলনাড়ু এবং তেলঙ্গানা। পুণের শিল্পাঞ্চলে টেসলার কারখানা খুলতে উঠেপড়ে লেগেছে মহারাষ্ট্রও। এর বাইরেও টেসলাকে আনতে কোমর বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে আরও কয়েকটি রাজ্য। কিন্তু এ নিয়ে কী ভাবছে পশ্চিমবঙ্গ?
রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, টেসলা যে ভারতে কারখানা তৈরির জন্য জমি খুঁজছে সে বিষয়ে তারা অবগত। এখনও অবধি টেসলাকে রাজ্যে কারখানা তৈরির বিষয়ে আমন্ত্রণ না জানানো হলেও বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির সংস্থাকে পশ্চিমবঙ্গে আনতে আগ্রহী তারা। তবে ভোটপর্ব মিটলে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা সবাই প্রচার নিয়ে ব্যস্ত। তাই নির্বাচন মিটে গেলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর টেসলাকে রাজ্যে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দু’-তিন দিন আগেই দেখেছি যে টেসলা ভারতে কারখানা খোলার জন্য জায়গা খুঁজছে। বাণিজ্যিক ভাষায় যাকে বলা ‘স্কাউটিং ফর প্লেসেস’। মহারাষ্ট্র, তামিলনাডুর মতো রাজ্যে ওরা জমি দেখার কাজ করেছে। এখনও টেসলার সঙ্গে আমাদের কথা হয়নি। কিন্তু আমরাও এ রকম একটি সংস্থাকে রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানাতেই পারি। এখন ভোটের সময়, সবাই ব্যস্ত। ভোটপর্ব মিটে গেলে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর তাদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয় ঠিক করা হবে। ভোটে বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরিয়ে নতুন সরকার এলে দেশে সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিস্থিতি তৈরি হবে। তখন আমরাও ওদের সঙ্গে কথা বলব।’’
টেসলার মতো সংস্থাকে রাজ্যে কারখানা তৈরির জন্য রাজি করাতে যে কোনও সরকারকেই কাঠখড় পোড়াতে হবে। তার জন্য বিশেষজ্ঞদের কমিটি গঠনের প্রয়োজন। সেই কমিটিতে কাদের জায়গা হবে তা-ও অনেক ভেবেচিন্তে ঠিক করতে হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও সে রকম কোনও কমিটি গঠনের কথা না ভাবলেও বিষয়টি তাঁদের মাথায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের বাণিজ্যমন্ত্রী। সঙ্গে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, ভোটের ব্যস্ততার কারণে এখনই কোনও কমিটি গঠন করা সম্ভব নয়। কমিটি গঠনের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তাই লোকসভা নির্বাচনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতার অনুমতি নিয়েই এই ধরনের কমিটি গঠন করা হতে পারে।