আগামী পাঁচ বছর দিল্লীর কুর্সি কার দখলে থাকবে তা নিয়েই এখন দেশের নানা প্রান্তে চলছে জল্পনা-কল্পনা। প্রতিটি রাজনৈতিক শিবির থেকেই করা হচ্ছে দাবী-পাল্টা দাবী। জনতার আদেশ এখনো বন্দী ইভি এমের পেটে। চার জুন সকাল থেকেই শুরু হবে ভোট ফলাফল গননার কাজ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে দেশের কুর্সিতে কারা বসতে চলেছে তাঁর দৃশ্য। ঐ পর্যন্ত গোটা দেশ জুড়েই চালু থাকবে কুর্সি দখল নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে তর্জার লড়াই। এই রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেও চলছে চুলছেড়া আসন্ন ভোট ফলাফল বিশ্লেষনের কাজ। রবিবার সংবাদ মাধ্যমের সামনে তাঁরা তুলে ধরলেন তাঁদের ভাবনা ও প্রত্যাশার কথা। দেশের বর্তমান শাসক দল গেরুয়া শিবির স্বাভাবিক কারনেই ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন নিয়ে মানসিক ভাবে বেশ চাঙ্গা। ভোট পরবর্তী সময়ে ভোটের ফলাফলের গতি প্রকৃতি ইঙ্গিত করতে নানা সমীক্ষার রিপোর্ট তুলে ধরছে। প্রায় প্রতিটি সমীক্ষার রিপোর্টই ইঙ্গিত করছে দিল্লীর কুর্সিতে ফের গেরুয়া শিবিরের তৃতীয় বারের মত প্রত্যাবর্তনের কথা। সঙ্গতঃ কারনেই এই সমীক্ষার রিপোর্টে গেরুয়া শিবির বেশ চাঙ্গা। রবিবার আগরতলায় ভোট সমীক্ষায় উঠে আসা ছবি নিয়ে প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল দলের ফলাফল কি হতে পারে তা নিয়ে। কতটাই বা আশাবাদী দলের প্রত্যাবর্তন নিয়ে? রাজীব ভট্টাচার্য সোজাসাপ্টা কোনও রাখঢাক না রেখেই বলে দেন, কুর্সি থাকছে মোদীর দখলেই।
দেশের কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় পরিবর্তনের আশায় মশগুল বিরোধী ইন্ডিয়া জোট। সমীক্ষার নানা হিসাবকে তাঁরা গন্য করতেই রাজী নন। তাঁদের সোজাসাপ্টা দাবী, এই সমীক্ষা মনগড়া। গেরুয়া শিবির থেকেই এই ধরনের হিসাব দেখিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে সুকৌশলে বিভ্রান্তী ছড়ানোর কাজ চলছে। দেশের শাসন ক্ষমতার পালাবদলের ছবিই দেখতে পাচ্ছে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট। দিল্লীর কুর্সিতে বসছে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট। বেশ জোরালো ভাবেই এই দাবী করতে দেখা গেল রাজ্যের কংগ্রেস নেতা বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনকে। রবিবার সংবাদ মাধ্যমের সামনে প্রতিক্রিয়ায় সুদীপ রায় বর্মন জানান
অপর দিকে দেশের বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের ক্ষয়িষ্ণু শরিক বামেরা ক্ষমতার পালাবদলের দাবী মুখে বললেও মনে যে খুব বেশী আশা রাখতে পারছে না তাঁর কিছুটা হদিশ মিলল বাম নেতা জীতেন্দ্র চৌধুরীর প্রতিক্রিয়ায়। রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে বাম দল সিপি আই এম দেশের আসন্ন ভোট ফলাফল নিয়ে অনেকটায় নিরাশায়। রাজনৈতিক কারনে প্রকাশ্যে এই বিষয়ে ঝেড়ে না কাশলেও মনের অন্দরে যে খুব একটা স্বস্তিতে নেই তাঁর একটা স্পষ্ট আভাস পাওয়া গেল সি পি আই এম রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধূরীর প্রতিক্রিয়ায়। জিতেন্দ্র চৌধুরী এদিন সাফ জানিয়ে দেন, ভোট দলের কাছে একটা রাজনৈতিক সংগ্রাম। ভোটের ফলাফলে যদি দূর্বলতার ছবি উঠে আসে তাহলে পরবর্তী সময়ে সেই ভুল বা ত্রুটিকে সংশোধনের মাধ্যমে দল এগিয়ে যাবে।
চার জুন সকাল পর্যন্ত চলবে হিসাব আর অঙ্কের খেলায় নানা ধরনের দাবী-পাল্টা দাবী। বেলা বাড়ার সঙ্গেই সঙ্গেই দিল্লী দখলের দৌড়ে কোন শিবির কতটা কাছে অথবা দূরে রয়েছে তাঁর স্পষ্ট ছবি উঠে আসবে সকলের সামনে। দেশের আগামী দিনের চলার পথ নির্ধারন করার দায়িত্ব কাদের হাতে দিয়েছেন দেশের আম জনতা, তাঁর চুড়ান্ত রায় বেড়িয়ে আসবে। এক পক্ষ হারবে অন্য পক্ষ জিতবে। যে পক্ষই বিজয়ী হোক দেশের আম জনতার জন জীবনের মৌলিক সমস্যার সমাধানে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহন করবে নতুন সরকার, এমনই ভরসা রাখছেন দেশের আমজনতা। মানুষের প্রত্যাশা পূরনে নতুন সরকার কতটা দায়িত্ব পালন করছে তা হয়ত বলবে সময়।