মনে করা হয় অম্বুবাচী চলাকালীন তন্ত্রক্রিয়ার কাজ খুব কার্যকর। তন্ত্র ক্রিয়ার যে কোনও কাজ এই দিনগুলোর মধ্যে করতে পারলে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়।
অম্বুবাচী মেলা প্রতি বছর আসামের রাজধানী গুয়াহাটির কামাখ্যা মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয়। কামাখ্যা মন্দিরকে গুরুত্বপূর্ণ মন্দির বলে মনে করা হয়। এই মন্দিরটি ৫১ টি শক্তিপীঠের মধ্যে একটি। কামাখ্যা মন্দিরে দেবী মা পূজিত হন। প্রতি বছর বর্ষাকালে এই মন্দিরে অম্বুবাচী মেলা হয়। প্রতি বছর এই সময়ে এই মেলার আয়োজন করা হয়। প্রতি বছর লক্ষাধিক ভক্ত এই মেলায় আসেন মায়ের দর্শন পেতে। মেলা শেষে ভক্তদের প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় ভেজা কাপড়। এটি মায়ের ঋতুস্রাবের বস্ত্র।
এ বছর অম্বুবাচী মেলা শুরু হবে ২২ জুন ২০২৪ থেকে। এই তিথি বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪ এ শেষ হবে। এই সময়ে, মন্দিরে কোনও পুরুষের প্রবেশ নিষেধ। তিন দিন পর যখন মন্দিরের দরজা খোলা হয়, তখন দেবীর চারপাশের কাপড় লাল রঙে ভিজে যায়।
প্রতি বছর জুন মাসে পালিত হয় অম্বুবাচীর মেলা। এই মেলা বসে যখন মা কামাখ্যার মাসিক হয়। এই সময় গর্ভ গৃহের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিন দিন পর মায়ের ঋতুস্রাব শেষ হলে মায়ের বিশেষ পুজো করা হয়। চতুর্থ দিন স্নানের পর দেবীকে সাজিয়ে ভক্তদের দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
সনাতন ঐতিহ্যে অম্বুবাচী মেলার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এই মেলা পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় মেলা। এ সময় ব্রহ্মপুত্র নদের জল স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাল হয়ে যায়। ৩ দিন পর জল স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্বাভাবিক রং এর হয়ে যায়। এই মন্দিরে দেবী মায়ের ভেজা কাপড় প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়। এই মেলাকে নারী শক্তির প্রতীকও মনে করা হয়।
দেখে নেব সেই কাজগুলো কী কী—
১) এই সময় নিত্যপুজো করার সময় কোনও রকম মন্ত্র পাঠ করা যাবে না। কেবল মাত্র ধূপ এবং প্রদীপ দেখিয়ে প্রণাম করতে হবে।
২) এই সময় কোনও শুভ কাজ করতে নেই। বিশেষ করে গৃহপ্রবেশ, হাল ধরা, বিবাহ প্রভৃতি।
৩) এই সময় বৃক্ষরোপণ করা যাবে না।
৪) এই কয়েক দিন ঘরের দেবীমুর্তি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হয়।
৫) এই সময় বিশেষ করে কোনও পশু পাখিকে আঘাত করতে নেই।
৬) এই সময়ে সাধ্যমতো কিছু পুরোহিতকে দান করুন।
৭) এই সময় যত বেশি সম্ভব গুরুমন্ত্র জপ করা উচিত। যাঁদের গুরুমন্ত্র হয়নি তাঁরা ইষ্টদেবতার নাম জপ করতে পারেন।
৮) এই সময় অবশ্যই আম, দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে।