আজকের শিশুরাই আগামীদিনের দিশারী। তাই তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একমাত্র সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হলেই পড়াশুনার দিকেও বিশেষ নজর থাকবে ছেলেমেয়েদের। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আয়ুষ্মান ভারত স্কুল হেলথ মিশন প্রকল্প চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত আয়ুষ্মান ভারত স্কুল হেলথ মিশনের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে বিভিন্ন কার্যক্রম করা হয়। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রম (আরবিএসকে) অন্যতম। মেনুষ্ট্রেয়েল হাইজিন প্রোগ্রাম, সাপ্তাহিক আয়রন এন্ড ফলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্টেশন প্রোগ্রাম, জাতীয় কৃমিনাশক দিবস, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ইত্যাদি কার্যক্রম করা হয়। শিশুরা হচ্ছে সমাজের অন্যতম মূল্যবান সম্পদ। তাদেরকে কিভাবে ভালো রাখা যায়, তাদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা যাতে বজায় থাকে সেটাই অন্যতম লক্ষ্য। শিশুরা আগামী ভবিষ্যতের দিশারী। কাজেই তাদেরকে ঠিকঠাক রাখার জন্য আয়ুষ্মান ভারত স্কুল স্বাস্থ্য মিশনের সূচনা হয়েছে। ত্রিপুরায় পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নীতি আয়োগের নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে ১২৫টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের মাধ্যমে এই প্রকল্প কার্যকর করা হবে। এতে সরাসরি প্রায় ৯০ হাজার ছাত্রছাত্রী উপকৃত হবে। পরবর্তী সময়ে রাজ্যের সবকটি স্কুল (সরকারি ও সরকারি সহায়তা প্রাপ্ত) এই প্রকল্প কার্যকর করা হবে। মূলত, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষার পাঠ্যক্রম সহ ৬টি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। সবাই মিলে একে সাফল্যমন্ডিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ছাত্রছাত্রীরা দৈনিক অন্তত ৬/৭ ঘণ্টা স্কুলেই থাকে। কাজেই এই প্রকল্প কার্যকর হলে তাদের জন্য বেশ সহায়ক হবে। এতে অবশ্য বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরেরও যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে। আর ছাত্রছাত্রীদের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে খেলাধুলা থেকে শুরু করে যোগ ব্যায়াম অভ্যাস করতে হবে। পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে আগে থেকে ছাত্রছাত্রীদের রোগ সম্পর্কে জানা থাকলে ভবিষ্যতে তাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য অনেক সহায়ক ভূমিকা নেবে। অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন কারণে শিশুদের মানসিক সমস্যা হয়। সেজন্য তাদের বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন হয়। কোভিডের সময়ে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সচেতনতা নিয়ে আমরা অনেক কিছু শিখেছি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শরীর সুস্থ না থাকলে শিশুদের কোথাও মনসংযোগ হবে না। আর সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হলে পড়াশুনার দিকেও নজর থাকবে তাদের। এনসিসি ও এনএসএস এর সঙ্গেও শিশুদের যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য যোগার গুরুত্বও অপরিসীম। আজকের এই কর্মসূচি খুবই ফলপ্রসূ হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভি কে পাল, নীতি আয়োগের স্টেট নোডাল এডভাইজার রাজীব কুমার সেন, রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, শিক্ষা অধিকর্তা এন সি শর্মা সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ। এছাড়া বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকাগণ এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
[21:55, 29/11/2024] Kamal Mallik BJP: ৪ দিনব্যাপী মিডিয়া স্কিল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপের উদ্বোধন রাজ্যের বর্তমান সরকার সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে আন্তরিক: মুখ্যমন্ত্রী
আগরতলা, ২৯ নভেম্বর: রাজ্যের বর্তমান সরকার সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে আন্তরিক। সাংবাদিকদের সমস্যাগুলি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় আগরতলা প্রেস ক্লাবে ৪ দিনব্যাপী মিডিয়া স্কিল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং আগরতলা প্রেস ক্লাবের লিফটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ কোনও অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হয় না। অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। আগরতলা প্রেস ক্লাবে লিফট বসানোর ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যে সংবাদ জগতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। একটা সময় বহিরাজ্যের সংবাদপত্রের উপর রাজ্যের পাঠকবর্গ বেশি নির্ভরশীল হলেও এখন স্থানীয় সংবাদপত্রগুলির উপর পাঠক ও শ্রোতাগণের আকর্ষণ অনেকগুণ বেড়েছে। বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রেও গুণগত দিক দিয়ে চ্যানেলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ফেক নিউজ কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নিউজ যাতে ভিউজ না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি বলেন, সব পেশার ক্ষেত্রেই কর্মশালা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রেও প্রযুক্তির বিরাট ভূমিকা এসে গেছে। চ্যালেঞ্জিং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওয়ার্কশপে আলোচনা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, সংবাদমাধ্যম হচ্ছে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সমাজ গঠনে সংবাদমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে। রাজ্যের সংবাদমাধ্যমের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ার সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ি এই ধরনের কর্মশালা আয়োজন করার জন্য উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকতার পরিধি এখন অনেক বেড়েছে। প্রকৃত অর্থেই ট্রেডিশনাল মিডিয়া এখন এক চ্যালেঞ্জের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। অনেকদিন পর রাজ্যে আসার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আগরতলা বিমানবন্দর থেকে রাজ্য অতিথিশালায় আসার রাস্তার চেহারা দেখে বুঝা গেছে আগরতলা অনেক পাল্টে গেছে। উন্নয়নের যে ব্যাপক ছোঁয়া লেগেছে তা স্পষ্ট। এরজন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আগরতলা শহর যে ভবিষ্যতে মেট্রো শহরে রূপান্তরিত হচ্ছে তা শহরে আসার পরই বুঝা গেছে।
আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, আজ সাংবাদিকদের জন্য খুবই আনন্দের দিন। আগরতলা প্রেস ক্লাবে লিফট বসানোর উদ্যোগ নেওয়ায় তিনি রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। স্বাগত বক্তব্যে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী বলেন, সমগ্র বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের দক্ষ করে তোলার জন্য এ ধরনের কর্মশালার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর নিয়মিতভাবেই এই ধরনের কর্মশালার আয়োজন করে থাকে। সমাজের কল্যাণে সাংবাদিকরা অত্যন্ত দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করছে। সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে রাজ্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। তিনি জানান, আগরতলা প্রেস ক্লাবে লিফট বসাতে প্রায় ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক রমাকান্ত দে। মুখ্যমন্ত্রী বিশিষ্ট সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ির হাতে স্মারক উপহার তুলে দেন।