পরকীয়া সম্পর্কে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা নষ্ট হয় তেমনি কয়েকটি জীবন সহ গোটা একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। এই পরকীয়ার বিষফোলে যে কোন অমানবিক কাজই করতে পারেন পরকীয়া আসক্ত নারী কিংবা কোন পুরুষ। এমনই এক দুঃখজনক ঘটনা সংঘটিত হয় বৃহস্পতিবার রাতের বেলা। পরকিয়ায় আসক্ত হয়ে বিশালগড় থানাধীন দুর্গানগর এলাকার বাসিন্দা মৃত গফুর মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া তার বিবাহিত স্ত্রীকে বেধড়ক মারপিট এবং রক্তাক্ত করে পাঠিয়ে দেয় হাসপাতাল। তার বিকৃত মস্তিষ্ক থেকে বাদ যায়নি তার জন্ম দেওয়া অবুঝ সন্তানও। তার স্ত্রীকে এই ভয়াবহ ও অমানবিক আক্রমণের মূল কারণ হচ্ছে সোহেলের পরক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছেন তার বিবাহিত স্ত্রী। এবার শুনুন পরক্রিয়ায় আসক্ত সোহেল কিভাবে নিজের সংসার সহ নিজের জীবনকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। গফর মিয়া কঠোর পরিশ্রম করে তিল তিল করে একমাত্র ছেলের ভবিষ্যতের জন্য প্রচুর পরিমাণ জায়গা সম্পদ তৈরি করেন। আজ থেকে কয়েক বছর আগে সোহেল বাবার অডেল সম্পত্তির জোড়ে স্থানীয় এক হিন্দু যুবতীকে বিয়ে করে বাড়িতে আনেন। এর কয়েক মাস পরেই সোহেল প্রতিবেশী এক ফৌজির সুন্দরী স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়েন। পরক্রিয়া, প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে গিয়ে বেশ কয়েকবার ধরা ও খান। এরপর ওই পরকীয়া নাগিনীর পরিবার ও শুরু হয় অশান্তি। এলাকার ৮ থেকে ৮০ সবাই জেনে যায় সুয়েলের পরকীয়ার কুকীর্তি। তার ঘরে থাকা হিন্দু যুবতী মেয়েটি হয়ে পড়ে অসহায়। শুরু হয় তার ওপর অকত্য নির্যাতন। একদিকে স্বামীর অবৈধ পরকীয়া সম্পর্ক অন্যদিকে স্বামীর অকথ্য নির্যাতন অবশেষে সহ্য করতে না পেরে সেই স্ত্রীও তার ঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। এর সুযোগে তার পরকীয়া নাগিনী সোহেলকে পুরো কবজা করে নেয়। নেমে আসে ওই ফৌজির পরিবারে অশান্তির আগুন। স্বামী দেবরের বিরুদ্ধে চলে মামলা। ওই ফৌজির পরিবার যাতে একেবারে ধ্বংস হয়ে না যায় তার জন্য সামাজিকভাবে উভয় পরিবার এবং স্থানীয়রা মিলে সুয়েলকে কঠোর বার্তা দিয়ে মীমাংসা সবার মাধ্যমে ঘটনাটি মিটমাট করা হয়। এরপর সুয়েল কলমচৌড়া থানাধীন আশাবাড়ি এলাকার গরিব পরিবারের এক যুবতীকে বিয়ে করে দ্বিতীয়বার সংসারী হয়। বিয়ের কয়েক মাস পরে নতুন স্ত্রী স্বামীর রূপ দেখে ভেঙ্গে পড়েন। স্বামী নাকি তাকে সরাসরি জানায়, আমি সমাজের জন্য বিয়ে করেছি, তোমার যা প্রয়োজন টাকা পয়সা আমি সবকিছু দেব তুমি শুধু আমার নামে মাত্র স্ত্রী থাকবে আর আমার কোন কাজে বাধা দিতে পারবে না। স্ত্রী বাপের বাড়ির লোকজনদের এ কথা জানালে উভয় পরিবারের তরফে বৈঠক বসলে সোহেল জানায় সে নাকি মজা করে বলেছে এমন কাজ কোনদিন করবে না। এর মধ্যে তাদের সংসারে এক সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানের জন্মের আগ পর্যন্ত লুকিয়ে লুকিয়ে ওই তার পূর্বতন পরক্রিয়া নাগিনির প্রেমে হাবুডুবু খেলেও সন্তান জন্মের পর সরাসরি স্ত্রীর সামনে স্বীকার করে নেয় তার পরকীয়ার কথা। এরই মাঝে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন সুয়েল। একদিকে নেশা অন্যদিকে পরকীয়া। অবৈধ প্রেমিকার জন্য নাকি তার পিতার রেখে যাওয়া কানেকানি সম্পত্তি বিক্রিও করে দেয়।এলাকায় চাউল হয়ে যায় যেহেতু অবৈধ প্রেমিকা সোহেলের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিতে পারছেন তাই তার ফৌজির স্বামীর তরফ থেকেও নাকি তেমন কোন বাধা আসছে না। তার বিবাহিত স্ত্রীকে প্রায় দিনে নির্যাতন চলায় সুয়েল। বেশ কয়েকবার মিটিং বসে একের পর এক সোহেলকে সাবধান করে আত্মীয় পরিজনরা। তার স্ত্রীর পরিবার হয়তো ভেবেছিল একটা সময় সে মানুষ হয়ে যাবে। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়িতে প্রবেশ করে অবৈধ প্রেমিকাকে স্মরণ করতেই স্ত্রী কান্না ভেঙ্গে পড়েন। এরপর সোহেল তার স্ত্রীকে এলো পাথারি মারধর শুরু করে। তার লাঠি আঘাতে রক্তাক্ত হয় তার স্ত্রী। তার এই অমানুষিক অত্যাচার থেকে রক্ষা পায়নি নাবালক শিশুটি ও। অবশেষে তার স্ত্রীকে বিশালগড় হাসপাতালে আনা হয়। শুক্রবার সকালে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিশালগড় মহিলা থানায় এসে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে তার নামে মামলার রজু করেন। পুলিশ ঘটনার নালিশ পেয়ে সোহেলের খোঁজে ছুটে যায় দূর্গানগর বাতানবাড়ি তার বাড়িতে।

Day by day, extramarital affairs are taking on a form even more dreadful than cancer