পেশায় সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। অসামান্য সুন্দরীর ইউটিউব, ফেসবুক, ইনসটাগ্রামে অনুগামীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তবে সেই আগুন রূপের আড়ালে চলত ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। তাঁর দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডের তথ্য ফাঁস হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন হরিয়ানার বাসিন্দা জ্যোতি মালহোত্রা। এরপরই তাঁর সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে উঁকি দিতে শুরু করেছে গোটা দেশ।
সুন্দরী এই গুপ্তচরকে গ্রেপ্তারের পর তদন্তকারীদের তরফে জানা গিয়েছে, একদিকে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন সিঁদুর চলছে সেই সময় ভারতের একের পর এক গোপন তথ্য পাকিস্তানে পাচার করছিলেন তিনি। পেশায় ট্রাভেল কনটেন্ট ক্রিয়েটার এই মহিলা এর আগে তিন তিন বার পাকিস্তান গেছেন। সবই ট্রাভেল ভিডিও বানানোর আছিলায়। ২০২৩ সালে, ভারতে পাক দূতাবাস কর্মী এহসান উর রহিম ওরফে দানিশের সঙ্গে জো-র আলাপ। সেই থেকেই পাকিস্তানের চরগিরি শুরু। ট্রাভেল ভিডিও বানানোর নামে পাকিস্তান গিয়ে জো একাধিক আইএসআই এজেন্ট এবং কর্তার সঙ্গে দেখা করে। তাদের মধ্যে শাকির আর রান শাহবাজ নামের দুই পাক এজেন্টের সঙ্গে জ্যোতির নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। পাক দূতাবাসের সদস্য দানিশ তো ছিলই। গত তিন বছরে হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবে বড় চর নেটওয়ার্ক তৈরি করে জ্যোতি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সম্প্রতি জ্যোতি ও আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে হরিয়ানা পুলিশ। ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাঁদের।
এদিকে সোশাল মিডিয়া জ্যোতির অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতের নানান জায়গার পাশাপাশি ব্লগের দৌলতে বিদেশেও নিত্য যাতায়াত ছিল তাঁর। পাকিস্তান ছিল মূল ঘাঁটি। এছাড়াও সিঙ্গাপুর, চিন-সহ নানা দেশে ঘুরে বেড়াতেন ট্রাভেল ব্লগের অছিলায়। সুন্দরী এই মহিলার স্বল্পবসনা বহু ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল। পাকিস্তানেরও নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে ভিডিও বানাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। যেখানে পাকিস্তানের গুণগান করছেন জ্যোতি। পাকিস্তানের হিন্দু মন্দিরের সামনেও বহু ভিডিও রয়েছে তাঁর।
তদন্তকারীদের তরফে জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য রীতিমতো র্যাকেট তৈরি করেছিলেন জ্যোতি নামের এই মহিলা। কুকীর্তি ফাঁস হওয়ার পর অপরাধীদের কড়া শাস্তির দাবি উঠছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ‘ভারতের সবথেকে বড় বিপদ হচ্ছে এইসব ঘরশত্রু। এদের নানা নাম, নানা চেহারা, নানা মুখোশ। কিন্তু দেশদ্রোহীতায় এরা সব এক। সবকটাকে ফাঁসিতে লটকানোর সময় হয়েছে।’