২০২৬ মার্চের মধ্যে আরও ৬টি একলব্য স্কুল সম্পূর্ণ করবে সরকার: মুখ্যমন্ত্রী

Govt to complete six more EMRS by March 2026: CM
Govt to complete six more EMRS by March 2026: CM

২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে আরও ৬টি একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের (ইএমআরএস) নির্মাণ কাজ শেষ করবে রাজ্য সরকার এবং এই স্কুলগুলির মাধ্যমে আমরা জনজাতির সংস্কৃতি এবং ভাষা সংরক্ষণ করতে পারবো।

আজ জম্পুইজলার প্রভাপুরে ৪৮০ আসনের একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ইএমআরএস (একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল) একটা ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম। জনজাতি বিষয়ক মন্ত্রক থেকে এটা শুরু হয়েছে। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পরে আমরা ইএমআরএস কী সেটা প্রত্যক্ষ করেছি।দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে বসবাসকারী জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান এবং সামগ্রিক উন্নয়ন সাধনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে এই স্কুলগুলিকে সরাসরি ও ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ত্রিপুরার জন্য ২১টি ইএমআরএস অনুমোদিত হয়েছিল এবং আজকেরটা নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১২টি ইএমআরএস চালু হলো। আমি এখানে এসে দুটি ক্লাশ পরিদর্শন করেছি। ৬০ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে। মোট ৪৮০ জন ছাত্রছাত্রী এই স্কুলে ভর্তি হবে। খুব সহসাই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত জনজাতি ছেলেমেয়েদের গুণমান সম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় বলছেন আমাদের অবশ্যই সমাজের অন্তিম স্তর পর্যন্ত যথাযথ শিক্ষা এবং সমস্ত সুবিধা প্রদান করতে হবে।

ডাঃ সাহা আরও জানিয়েছেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে এখনও এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের কাজ শুরু করা হয় নি, যেখানে ত্রিপুরা এই স্কুল ২১টি পেয়েছে। নীতি আয়োগ থেকে ত্রিপুরা ফ্রন্ট রানার রাজ্যের মর্যাদা পেয়েছে। কিছুদিন আগে আমাদের রাজ্য দেশের মধ্যে তৃতীয় পূর্ণ সাক্ষর রাজ্যের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। আমরা শিক্ষার উন্নয়নের জন্য কাজ করছি এবং সমস্ত মানদণ্ডের ভিত্তিতে আমাদের রাজ্যকে একটি পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ইউনেস্কোর গাইডলাইন অনুসারে যদি জনসংখ্যার ৯৫% শিক্ষিত হয়, তবে একে ১০০% হিসেবে ধরে নিতে হবে। এমন একটা সময় ছিল যখন মানুষ পড়াশোনার জন্য এখানে আসত। এখন এটা আবার শুরু হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে আমাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করছি। এই স্কুলগুলির মাধ্যমে আমরা সংস্কৃতি ও ভাষা সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবো। যারা আগামীদিনে ইএমআরএস থেকে পাশ আউট হবেন, তারা তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন এবং সাংস্কৃতিক বিকাশ ও ড্রপআউটের সংখ্যা হ্রাস করতে বিশেষ ভূমিকা নিতে পারবেন।

বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সরকারের বিশ্বাস আছে যে এই স্কুলগুলি গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করবে এবং আগামী দিনে ত্রিপুরার জন্য উপকারী হবে। শুধু শিক্ষা নয়, খেলাধুলা এবং দক্ষতা বিকাশও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই স্কুলগুলি সিবিএসই পাঠ্যক্রম অনুসরণ করছে এবং জওহর নবোদয় বিদ্যালয় মডেলকে সামনে রেখে এই ইএমআরএসগুলি শুরু হয়েছে। বিশেষ কোচিং ক্লাসের পাশাপাশি বিনামূল্যে থাকা, পোশাক, বই এবং সমস্ত কিছু নিখরচায় সরবরাহ করা হয়। এই একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলগুলিতে মোট ২,৪৭৫ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে, যার মধ্যে ১,১৮৯ জন ছাত্র এবং ১,২৮৬ জন ছাত্রী। ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে আরও ৬টি ইএমআরএস অম্পি, হেজামারা, অমরপুর, ছামনু, মান্দাই এবং মনুতে নির্মিত হবে। আর আমরা এই ২১টি একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল নির্মাণ সম্পূর্ণ করতে পারলে একসঙ্গে ১০,০০০ এরও অধিক ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করতে সমর্থ হবো। আমরা ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রি ম্যাট্রিক স্কলারশিপের পরিমাণও বৃদ্ধি করেছি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, বিধায়ক মানব দেববর্মা, জম্পুই জলা আরডি ব্লকের চেয়ারম্যান বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব কে শশী কুমার, সিপাহীজলার জেলাশাসক সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শুভাশিস দাস, পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার নমিত পাঠক সহ অন্যান্য আধিকারিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।