গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও পশুপালন ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। বিশেষ করে কৃষকদের সার্বিক কল্যাণে তিনি চিন্তাভাবনা করছেন। আর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত দিশায় ত্রিপুরা সরকারও কাজ করছে।
শুক্রবার আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে আয়োজিত মুখ্যমন্ত্রী প্রাণী পালক সম্মান নিধি সন্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তর বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি নানা কাজ করছে। এতে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রাণীজাত খাদ্য সামগ্রীর উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আরো বেশি কাজ করতে হবে। বেনিফিশিয়ারি সহ অন্যান্যদেরও প্রাণী পালনে আরো আকৃষ্ট করতে হবে। দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসবের যোগান আরো কিভাবে বাড়ানো যায় সেটা দেখতে হবে। পশু পাখিদের টিকাকরণ, চিকিৎসা, রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে দপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। রাজ্যে এখন পর্যন্ত ১৬টি ভেটেরিনারি হাসপাতাল রয়েছে। প্রায় ৬৫টি ভেটেরিনারি ডিসপেনসারি রয়েছে। ৪৬০টি ভেটেরিনারি সাব সেন্টার রয়েছে। এর পাশাপাশি পশু পাখিদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য ১৩টি মোবাইল ভেটেরিনারি ইউনিট চালু করা হয়েছে। কল সেন্টারের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে এসব মোবাইল ইউনিট দ্রুত পরিষেবার জন্য পৌঁছে যাবে। এতে পশু পাখিগুলো মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে পারবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধীনে থাকা হাসপাতালগুলিতে অত্যাধুনিক মানের পরিকাঠামো যুক্ত করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন ধরণের রোগকে চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। এই দপ্তর প্রায় ১৩,০৩০টি পোলট্রি ইউনিট, ৪,৪০২টি ক্ষুদ্র হাঁস পালন কেন্দ্র খুলেছে। এছাড়া এই প্রকল্পে ২০২৩ – ২৪ অর্থবর্ষে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণী পালক সম্মান নিধি গবাদি প্রাণী পালন উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে আর্থিক সহায়তা প্রকল্প চালু করা হয়েছে। প্রায় ২ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩১০ মেট্রিক টন দুধ, ৫৯ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন মাংস, ৩৫.৯৬ কোটি ডিম উৎপাদনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী উন্নত গো ধন প্রকল্পে গবাদি পশুর সংখ্যা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্ত্রী বাছুরের সংখ্যা বাড়িয়ে দুধের ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশনে ১০টি ভিলেজের মতো চিহ্নিত করে গবাদি পশুর সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সবদিক দিয়ে বিচার করলে এই দপ্তর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ ভালো কাজ করছে। এসবের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরার জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে এবং আর্থিকভাবে গ্রামীণ এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন। এতে আগামীতে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলার স্বপ্ন সফল হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীও পশুপালন ক্ষেত্র এবং কৃষকদের সার্বিক কল্যাণে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশিত দিশায় কাজ করছে রাজ্য সরকারও।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সুধাংশু দাস, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত সহ দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ।