Clashes arise between BJP officials in Agartala
Clashes arise between BJP officials in Agartala

মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী ক্ষেত্র তথা ৮ টাউন বড়দোয়ালির মন্ডলের সভাপতি সঞ্জয় সাহা এবং মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার দেব ওরফে সামুর মধ্যে মারপিটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। গোটা বড়দোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্র জুড়ে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ মন্ডল সভাপতি সঞ্জয়ের যুব বাহিনীর হাতে নাক ভেঙেছে সাধারণ সম্পাদক সামু’র ও তার এক সাগরেদের।

ঘটনা শনিবার রাতে রবীন্দ্র ভবন চত্তরে। ক্ষমতার আস্ফালন দেখিয়ে এই চত্তরে গত দুবছর ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা তোল্লা তুলে শ্যামা মায়ের পূজা পূজা হচ্ছে। শণিবার রাতে ছিল এলাহি খাওয়া দাওয়ার আয়োজন। প্রায় শেষদিকে ছিল ওই নাইটপার্টি। রাত বাড়লে বিক্ষিপ্ত এক ঘটনাকে নিয়ে মন্ডল সভাপতি সঞ্জয়ের সাথে সামুর বসচা শুরু হয়। এরপর সঞ্জয়ের বখাটে বাহিনী কেলানি দেয় সামু ও তার এক বন্ধুকে। নাক ভাঙ্গে সামুর। এই ঘটনা ফেসবুক পোস্টে ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে বড়দোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্রের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে। শারদীয়া উৎসব হোক কিংবা কালীপুজো, দেবীর প্রতিমার পোস্টারে নিচের দিকে মন্ত্রীদের পাশাপাশি মন্ডল নেতাদের ও ছবি দেখা যায়।

 স্বাভাবিকভাবেই রবীন্দ্র ভবনের সামনে লাগানো পোস্টারে শ্যামা মায়ের ছবির নিচের দিকে রয়েছে মন্ডল সভাপতি সঞ্জয় সাহার ছবিও। এবারে এই মন্ডল সভাপতিই মায়ের প্রতিমার সামনে জড়ালেন মারপিটে। যার কারণে ছি: ছি: রব উঠেছে সাধারণ মহলে। সূত্রের খবর প্রথমে মন্ডল সভাপতি সঞ্জয় সাহা এবং মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার দেব ওরফে সামু’র মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর ঘটনা গড়ায় হাতাহাতিতে। কিন্তু মন্ডল সভাপতি সঞ্জয় সাহা সবদিক থেকেই পাওয়ার ফুল। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কখনো মন্ত্রী কিংবা কখনো বিধায়কদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এই তথাকথিত পাওয়ার ফুল মন্ডল সভাপতিকে।

আর এই কারণেই ৮ টাউন বড়দোয়ালি যুব মোর্চার পুরোপুরি সাপোর্ট রয়েছে সভাপতি সঞ্জয় সাহার উপর। সঞ্জয় সাহা বনাম শ্যামল কুমার দেব ওরফে সামু’র মধ্যেকার মারপিটের ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই খবর পৌঁছে যায় যুব মোর্চার কাছে। সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে যুব মোর্চার হনু বাহিনী। তারা ব্যাপক মারধর করে মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক সামুকে। ঘটনাস্থলেই নাক ফেটে যায় সামু’র। যতটুকু খবর সভাপতি এবং সম্পাদকের চেয়ার নিয়ে টানাটানির জন্যই এই লড়াই। পাশাপাশি রয়েছে দু নম্বরি কামাই এর ভাগ বাটয়ার। এই মন্ডল নেতাদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে জমি দখল এবং তা কেনাবেচার বহু অভিযোগ রয়েছে। অঘোষিতভাবে নিয়ম তৈরি হয়ে গেছে মন্ডল নেতাদের না জানিয়ে কোন ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত জায়গা বিক্রি করতে পারবেনা। আর বিক্রি করলেও দিতে হবে কমিশন। যিনি জায়গা কিনবেন তাকেও দিতে হবে কমিশন। এই কমিশন বাণিজ্য এখন পুরোপুরি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে ৮ টাউন বড়দোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্রে। বখরা আদায়ের এই রমরমা রসালো বাণিজ্যে ফুলেফেঁপে উঠেছে মন্ডলের সভাপতি এবং সম্পাদকের মত নেতারা। মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র হওয়ার সুবাদে এই রসালো কমিশন বাণিজ্যের কারি কারি অর্থ লাফালাফি করছে এখানে। যার কারণে পুলিশেরও হাত-পা বাধা। এই রসালো কমিশন বাণিজ্যের ঠেলাঠেলিতে ৮ টাউন বড়দোয়ালি মন্ডল যে রীতিমতো লাগামহীন হয়ে পড়েছে তার রীতিমতো স্পষ্ট, রবীন্দ্র ভবনের সামনে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায়। মন্ডল নেতাদের এই লাগাম কতটুকু টানতে সক্ষম হন মুখ্যমন্ত্রী এবারে সেটাই দেখার।

মন্ডলের নেতাদের প্রকাশ্য এই মারপিটের ঘটনায় মুখ পুড়লো শাসক দলের। মায়ের পূজার নামে যে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।