মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রচারে গিয়ে ‘এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়’ (ঐক্যবদ্ধ থাকলে নিরাপদে থাকা যাবে) স্লোগান তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভারতের ধনীতম রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফল বলছে, ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জাদুমন্ত্রেই ছন্নছাড়া বিরোধী জোটকে পরাস্ত করল বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ। হালে পানিই পেল না কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব) এনসিপি (শরদ)-র ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী‘ জোট। মহারাষ্ট্রে বিজেপি ঝড়ে উড়েগেছে কংগ্রেস, এনসিপি এবং উদ্ধব শিবসেনা।
মহারাষ্ট্রে ২৮৮টি আসনের মধ্যে ২৩৬টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি জোট, কংগ্রেস জোট পেয়েছে মাত্র ৪৮, অন্যান্যরা ৪টি আসনে জয়ী হয়েছে। অথচ পাঁচ মাস আগে গত লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে ধাক্কাই খেতে হয়েছিল বিজেপিকে। ২০১৯ সালে ২৩টি আসনে জয়ী হলেও ২০২৪ সালে মহারাষ্ট্রের মাত্র ৯টি লোকসভা আসনে পদ্মফুল ফুটেছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন, বছরশেষে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনেও হারতে হবে পদ্মশিবিরকে।
ভোটপন্ডিতদের একাংশের সেই পূর্বাভাসকে ভুল প্রমাণিত করে একাই ১২৫টি আসন জয়ের পথে বিজেপি। ২০১৪ সালে প্রবল মোদীঝড়ে মহারাষ্ট্রে ১২২টি বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এ বার সেই ‘ঝড়’ না-থাকলেও দশ বছর আগের সাফল্যকেও ছাপিয়ে গেলেন দেবেন্দ্র ফডণবীসেরা। গত পাঁচ বছরে একাধিক নাটকীয় উত্থানপতন ঘটেছে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে। পুরনো দল ভেঙে তৈরি হয়েছে নতুন দু’টি দল। আর তার জেরেই এ বারের ভোটে চিরায়ত চতুর্মুখী লড়াইয়ের বদলে দেখা গিয়েছিল মোট ছ’টি দলের দ্বিমুখী লড়াই। ২০২২ এবং ২০২৩ পর পর দু’টি বর্ষায় দুই বিদ্রোহের সাক্ষী মহারাষ্ট্র। প্রথম বর্ষায় শিবসেনা ভেঙে বিজেপির হাত ধরেছিলেন পুরনো শিবসৈনিক একনাথ শিন্ডে। সেই বিদ্রোহেই ভেঙেছিল বাল ঠাকরের সাবেক শিবসেনা, ভেঙেছিল কংগ্রেস-শিবসেনা-এনসিপির জোট সরকারও। আর তার পরের বছরের বর্ষায় কাকা শরদ পওয়ারের এনসিপি ছেড়ে বিজেপির হাত ধরেন ভাইপো অজিত পওয়ার । অচেনা দুই জোটসঙ্গীকে সঙ্গে নিয়েই নির্বাচনে লড়তে নেমেছিল শাসকজোটের ‘বড়দা’ বিজেপি।