অপারেশন সিঁদুরের পর সিন্ধু চুক্তি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত ভারত সরকার নিয়েছিল, সেই সিদ্ধান্ত বদলাবে না। স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে ভাষণে স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাকিস্তানের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর কড়া বার্তা, “রক্ত আর জল একসঙ্গে বইতে পারে না। একতরফা সিন্ধু চুক্তি আমরা কোনওভাবেই সহ্য করব না।”
লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, “সিন্ধু চুক্তির মতো অন্যায়পূর্ণ এবং একতরফা চুক্তি আমরা কোনওভাবেই মানব না। আমার দেশের ভূমির উপর দিয়ে বইবে, ভারতের মাটি দিয়ে যে নদী বইবে সেটার অধিকার শুধুমাত্র আমাদের দেশের অন্নদাতাদের।” পাকিস্তানের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা, “বর্তমানে সিন্ধু চুক্তির যে শর্ত রয়েছে, সেই শর্ত আমরা মানব না। কৃষকদের হিতের জন্য, দেশের হিতের জন্য এই সমঝোতা কোনওভাবেই মানা হবে না।”
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের বুলেটবৃষ্টিতে রক্ত ঝরেছে ২৬ নিরীহ মানুষের। পাক মদতপুষ্ট লস্কর জঙ্গিরা এই নাশকতা ঘটিয়েছে, একের পর এক এই প্রমাণের জেরে পরেরদিন অর্থাৎ ২৩ এপ্রিলই কার্যত পালটা দিতে শুরু করে ভারত। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করে দেয় নয়াদিল্লি। ১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সিন্ধু জলচুক্তি সই করে ভারত ও পাকিস্তান। ১৯৬০ সালের চুক্তি মতে শতদ্রু, বিপাশা, রবি নদীর জল ব্যবহার করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ভারতের। সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগার অধিকাংশ জলের ভাগ পেয়েছে পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার জলের উপরে পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ, ভারতের ২০ শতাংশ। তবে ওই নদীগুলিতে শর্তসাপেক্ষে বাঁধ তৈরি করতে পারে ভারত। দীর্ঘদিন ধরেই নয়াদিল্লির দাবি ছিল, সিন্ধু জলচুক্তিতে সংশোধন করতে হবে। কারণ ভারতের নদীবাঁধ দেওয়া নিয়ে বরাবর ইসলামাবাদের প্রবল আপত্তি।
এই চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু ও উপনদীগুলির যে জল পাকিস্তান পেত, তাতেই সে দেশের চাষাবাদ, পানীয় জলের অধিকাংশ চাহিদা মিটত। কিন্তু পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর সেই চুক্তি বাতিল করে ভারত। এরপর পাকিস্তান একাধিকবার চুক্তি পুনরায় চালু করার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু নয়াদিল্লি সাড়া দেয়নি। লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট করে দিলেন, বর্তমান শর্তে কোনওভাবেই সিন্ধু চুক্তি মানা হবে না।