মঙ্গলবার বাজেটে কোন চমক, নজর গোটা দেশের।
সপ্তমবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসাবে বাজেট পেশ করবেন নির্মলা সীতারামন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী মোরারজি দেশাই টানা ছ’বার বাজেট পেশ করেছিলেন। সেই রেকর্ড এবার ভাঙবেন নির্মলা। সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে সোমবার। ২৩ জুলাই, মঙ্গলবার কেন্দ্রের তৃতীয় মেয়াদের নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবেন নির্মলা।
স্বাধীন ভারতের প্রথম অর্থমন্ত্রী মোরারজি দেশাই ১৯৬৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত টানা ৬ বার সংসদে বাজেট পেশ করেছিলেন। লোকসভা ভোটের আগে ১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করেন নির্মলা। এবার তৃতীয় মোদি সরকারের প্রথম বাজেট পেশ করবেন তিনি। ২০২৪-’২৫ সালের বাজেট হলেও, অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশ আগামী ৫ বছর কোন পথে যাবে তার দিশা দেওয়ার চেষ্টা করবে মোদি সরকার। কর ছাড় থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কী পদক্ষেপ নেবে তার দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। এবার অধিবেশন ১২ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। বেশ কয়েকটি বিল এই অধিবেশনে পাশ করাবে মোদি সরকার। লোকসভা ভোটে বিজেপি ভালো ফল করতে পারেনি। তাই এবারের বাজেট অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে অর্থনীতিবিদরা। বাজেটে সম্ভাব্য চমক নিয়ে জল্পনা চলছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ বছরের বাজেটে মোদি সরকার জনমোহিনী পথ অবলম্বন করতে পারে। বিজেপি তার শরিকদের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসা সত্ত্বেও, তারা প্রত্যাশিত হিসাবে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি, এবং বিরোধীরা আগের দুই মেয়াদের তুলনায় এবার শক্তিশালী। উপরন্তু, জম্মু ও কাশ্মীর, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা এবং ঝাড়খণ্ড-চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন এই বছরই হতে চলেছে, যা বিজেপির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলিতে দলের ফল গত লোকসভা নির্বাচনের চেয়ে খারাপ ছিল, যা বিরোধীদের মনোবল বাড়িয়েছিল। ফলে, বাজেট জনসমর্থন আদায়ের দিকে মনোনিবেশ করতে পারে বিজেপি, বিশেষত ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে। এদিকে বাজেট অধিবেশন চলাকালীন সরকারকে চাপে ফেলতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধীরা। তারা লোকসভার ডেপুটি স্পিকার হিসাবে ইন্ডিয়া জোটের কাউকে নিয়োগের উপর জোর দিচ্ছে।
নতুন বাজেটে করদাতাদের জন্য যে সুবিধাগুলি ঘোষণা করতে পারেন সে সম্পর্কেও অনেক প্রত্যাশা এবং জল্পনা রয়েছে। প্রত্যাশার মধ্যে অন্যতম হল স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সীমা বৃদ্ধি। বেতনভোগীদের জন্য প্রতি বছর ৪০ হাজার টাকা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ২০১৮-র বাজেটে ফিরিয়ে আনা হয়। পরে ২০১৯-এর অন্তর্বর্তী বাজেটে সেই সীমা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়। তারপর থেকে বিভিন্ন সময়ে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়ানোর দাবি উঠেছে। কিন্তু সেই দাবি মানেননি নির্মলা। সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত, এবারের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সীমা বাড়িয়ে এক লক্ষ টাকা করতে পারেন।