এরপর দেশের মাটিতে জঙ্গি হামলা হলে তা যুদ্ধ হিসেবে দেখবে ভারত। সঙ্গে সঙ্গে হবে প্রত্যাঘাতও। ইজরায়েলের পথে হেঁটে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। ভারত-পাকিস্তান সংঘাত আবহে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
গত তিন দশকে একাধিক বড় বড় সন্ত্রাসবাদী হামলার সাক্ষী থেকেছে এই দেশ। কখনও মুম্বই লোকাল ট্রেনে বিস্ফোরণে প্রাণ হাকিয়েছে শতাধিক মানুষ। আবার কখনও সমুদ্র পেরিয়ে এসে বাণিজ্যনগরীতে এলোপাথারি গুলি চালিয়ে প্রাণ কেড়েছে আমজনতার। বারবার রক্তাক্ত হয়েছে কাশ্মীর। রক্ত ঝরেছে সেনাকর্মীদেরও। পুলওয়ামা থেকে পাঠানকোট, উধমপুর থেকে পহেলগাঁও, স্বজনহারা হয়েছে একের পর এক পরিবার। তারপরেও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে ভারত। তদন্ত করে প্রমাণ তুলে দিয়েছে সন্ত্রাসের ‘আতুঁড়ঘর’ পাকিস্তানের হাতে। সুবিচার দাবি করেছে। কিন্তু পড়সি দেশ বারবার দায় ঝেড়ে ফেলছে কাঁধ থেকে। জেহাদিদের বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে। তাই এবার কড়া পদক্ষেপের পথে মোদি সরকার। দেশের মাটিতে সন্ত্রাসহানাকে যুদ্ধ হিসেবে গণ্য করে প্রত্যাঘাত করবে তারা।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, ভারতের ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ ইজরায়েল এই নীতিতে বিশ্বাসী। দেশের মাটিতে যে কোনও নাশকতা হামলাকে যুদ্ধ হিসেবে গণ্য করে প্রত্যাঘাত করে তারা। এই নীতি গ্রহণ করেছিলেন ইজরায়েলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ার। সেই নীতিই এবার গ্রহণ করল কেন্দ্র। ফলে যে কোনও নাশকতামূলক ঘটনা ঘটলে পাকিস্তানের উপর প্রত্যাঘাত করতে আর সময় লাগবে না ভারতের।
প্রসঙ্গত, ভারত-পাক সীমান্তে উত্তেজনা, পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের সম্ভাবনা যত বাড়ছে, দিল্লিতে ততই বাড়ছে তৎপরতা। এদিন সকাল থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়ে গেল নয়াদিল্লিতে। সেনার শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং আলাদা করে কথা বললেন সেনা সর্বাধিনায়কের সঙ্গে। এদিন দুপুরে প্রথমে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ অনিল চৌহান দেখা করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে। সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে জানান তিনি। এরপর সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শীর্ষ নিরাপত্তা আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তিন সেনার প্রধান, সেনা সর্বাধিনায়ক অনিল চৌহান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকরা। মনে করা হচ্ছে, সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।