মুম্বাই সহ আশেপাশের এলাকায় টানা অতি ভারী বর্ষণের ফলে মঙ্গলবার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর মুম্বই শহর ও উপনগর অঞ্চলের জন্য ‘লাল সতর্কতা’ জারি করেছে, যা নির্দেশ করে যে কিছু কিছু অঞ্চলে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিক্রোলিতে সর্বাধিক ২৫৫.৫ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। সান্তাক্রুজে ২৩৮.২ মিমি ও কোলাবায় ১১০.৪ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন অংশে জলাবদ্ধতার কারণে রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
অন্ধেরি, দাদর, সিয়ন, চেম্বুর, পরেল-সহ একাধিক নিম্নাঞ্চলে রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মিঠি নদীর জলস্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় কুরলার ক্রান্তি নগর বস্তি এলাকা থেকে প্রায় ৪০০ জন বাসিন্দাকে সরিয়ে কুরলার এমএম মিউনিসিপ্যাল স্কুলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে বিএমসি ঘোষণা করেছে যে মঙ্গলবার মুম্বই মেট্রোপলিটন অঞ্চলের সমস্ত সরকারি, আধা-সরকারি এবং বিএমসি অফিস বন্ধ থাকবে, শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবাগুলি খোলা থাকবে। বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কর্মীদের ওয়ার্ক ফ্রম হোম করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, শহরের সমস্ত স্কুল ও কলেজ মঙ্গলবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রেল পরিষেবা আংশিকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। সেন্ট্রাল ও হারবার লাইনে ট্রেন চলাচল ৫-১০ মিনিট দেরিতে হচ্ছে। ওয়েস্টার্ন রেলওয়েতেও পরিষেবা সামান্য দেরিতে চলছে। একটি টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে আম্বিবালি ও শাহাদ স্টেশনের মধ্যে ট্রেন চলাচলে সমস্যা হয়েছে।
অন্যদিকে, ভারী বৃষ্টির ফলে মুম্বাই বিমানবন্দরের আশপাশের রাস্তাগুলিতে জল জমে যাওয়ায় বিমান পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স একটি ট্রাভেল অ্যাডভাইসরি জারি করে জানিয়েছে, যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে এবং বহু ফ্লাইটের সময়সূচিতে পরিবর্তন এসেছে। যাত্রীদের নিজ নিজ ফ্লাইট স্ট্যাটাস অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে দেখে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অবিরাম বৃষ্টির ফলে মুম্বাই হাইকোর্ট মঙ্গলবার দুপুর ১২:৩০ পর্যন্ত খোলা ছিল। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, খারাপ আবহাওয়া এবং পরিবহণের সমস্যার কারণে সমস্ত বিচারপতি, আইনজীবী এবং কর্মীদের জন্য আদালতের সময়সীমা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃষ্টিপাত ও জলস্ফীতির ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কায় মুম্বাইবাসীদের অনাবশ্যক বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। পরিস্থিতির উপর নজর রেখে বিএমসি, রাজ্য সরকার ও বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।