সোম-সকালের ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮, জখম অন্তত ৪১ জন। তবে পরিস্থিতি যে রকম, তাতে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা উদ্ধারকারীদের
ফাঁসিদেওয়ায় ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনায় (Kanchenjunga Train Accident Death) মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫, জানাল পিটিআই। জখম অন্তত ২৫। তবে পরিস্থিতি যে রকম, তাতে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা উদ্ধারকারীদের। এদিন সকালে ফাঁসিদেওয়ার কাছে শিয়ালদামুখী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা দেয় একটি মালগাড়ি। ভয়ঙ্কর এই দুর্ঘটনায় অনেককেই বালেশ্বরের করমণ্ডলের স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে। এদিন মালগাড়ির ইঞ্জিনের উপরে উঠে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার বগি, লাইন থেকে ছিটকে যায় আরও একটি বগি। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ছাড়ার পরই এই ঘটনা ঘটে। কিন্তু একই লাইনে কী করে দুটি ট্রেন উঠে এল? আপাতত সেটিই প্রশ্ন।
রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সিইও জয়া বর্মা সিনহা জানান, সোমবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিট নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। আপাতত উদ্ধারকাজ শেষ। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি আরও জানান, এই দুর্ঘটনায় মালবাহী গাড়ির চালক এবং সহকারী-চালকের মৃত্যু হয়েছে। মারা গিয়েছেন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের গার্ডও। দুর্ঘটনার খবর পেতে স্থানীয়রাই প্রথমে উদ্ধারে ছুটে আসেন। পরে আসনে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের রেলের এরিয়া অফিসার। কিছু কামরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান জয়া। সব মিলিয়ে তুমুল আলোড়ন ফাঁসিদেওয়ায়।
প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, শিয়ালদামুখী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা মেরেছিল মালগাড়িটি। সেই অভিঘাতে পিছনের দুটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে দুমড়ে মুচড়ে যায়। একটি কামরা আরেকটি কামরার ওপর উঠে যায়। আগরতলা থেকে কলকাতায় যাচ্ছিল ওই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ দার্জিলিঙের রাঙাপানি স্টেশন পেরোতেই নিজবাড়ি ও চটেরহাট স্টেশনের মাঝে ফাঁসিদেওয়ার নির্মলজোত এলাকায় ট্রেনের পিছনে মালগাড়ি ধাক্কা মারে। যাত্রী বোঝাই ট্রেনের দুটি কামরা পুরোপুরি উল্টে যায়। সিগন্যাল-বিভ্রাটে দুর্ঘটনা কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রাই উদ্ধারকাজে হাত লাগান। তবে এই দুর্ঘটনার পরে আপাতত উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে রেল-যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে। যদিও রেলের তরফে জানানো হয়েছে, উদ্ধারকাজ শেষ। আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে ওড়িশার বালেশ্বরে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বালেশ্বরে লাইনচ্যুত হয়ে যায় সেই ট্রেন। জানা যায়, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সঙ্গে একই লাইনে এসে পড়ে একটি মালবাহী ট্রেন। দুই ট্রেনের মধ্যে একেবারে মুখোমুখি সংঘর্ষে ২৯৬ জনের মৃত্যু হয়। সেই আতঙ্কের স্মৃতিই আবার ফিরল ফাঁসিদেওয়ায়।