সিন্ধু চুক্তি বাতিল হতেই বন্যায় ভাসছে পাকিস্তান! ঘরছাড়া পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কয়েক শো পাকিস্তানি। জারি হয়েছে জরুরি অবস্থাও। পাকিস্তানের অভিযোগ, না জানিয়েই উরি বাঁধ থেকে বিতস্তা নদীর জল ছেড়েছে ভারত। এই পরিস্থিতিকে ‘জল সন্ত্রাস’ বলেও দাবি করছে তারা। পহেলগাঁওয়ে জেহাদি হামলায় প্রাণ গিয়েছে ২৬ জনের। নেপথ্যে পাকিস্তানের মদত। ‘বদলা’ নিতে সিন্ধু জলচুক্তি আপাতত বাতিল করে নয়াদিল্লি। এই চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল, কোনও বাঁধ থেকে জলছাড়ার কথা নির্দিষ্ট সময় আগে পাকিস্তানকে জানাতে হবে। যাতে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করতে পারে তারা। চুক্তি বাতিলের পর শনিবার রাতে আচমকাই জল বাড়তে শুরু করে বিতস্তা নদীর। অনন্তনাগের ভেরিনাগ এলাকায় জন্ম। তারপর ঝিলম বা বিতস্তা নদী বয়ে গিয়েছে জম্মু কাশ্মীরের উপর দিয়ে। সীমানা পার করে তা পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে। শনিবার রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের চাকোঠি এলাকা থেকে নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু করে। বিতস্তার তীরে রয়েছে পাকিস্তানের হাট্টিয়ান বালা জেলা। যা মুজফফরবাদ থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে। গতকাল রাতে সেখানকার স্থানীয় মসজিদ থেকে ঘোষণা করে বলা হয়, যত দ্রুত সম্ভব নদীর পাক থেকে সরে যেতে হবে। আর ঘোষণার পরই স্থানীয়দের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। অভিযোগ, ঘর থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসও সরাতে পারেনি তারা। বরং প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছাড়তে হয়েছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, ভারত আন্তর্জাতিক জলচুক্তি সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করেছে। ‘জল সন্ত্রাস’ তৈরি করেছে। যদিও নয়াদিল্লির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বরং পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ পর্যটককে হত্যার পর যে সাত দফা কূটনৈতিক ‘প্রত্যাঘাত’ করেছে ভারত। তার অন্যতম হল সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত রাখা। ফলে এই ভারত এই পদক্ষেপ করতে পারেই বলে দাবি করছে ওয়াকিবহাল মহল।
ভৌগোলিক কারণে পাকিস্তানকে জলতেষ্টায় মারতে পারে ভারত। অন্যতম কারণ ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত ভারত-পাক সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নদীগুলি ভারতের দিক থেকেই পাকিস্তানে প্রবাহিত। চুক্তি অনুসারে, ভারতের নিয়ন্ত্রণে সিন্ধুর পূর্বের তিন উপনদী— বিপাশা (বিয়াস), শতদ্রু (সাটলেজ) এবং ইরাবতী (রাভি)-র জল। এছাড়া সিন্ধু ও তার দুই উপনদী বিতস্তা (ঝিলম), চন্দ্রভাগার (চেনাব) জলের উপর পাকিস্তানের অধিকার। এর মাঝেই বিতস্তার জলে বন্যায় ভাসল পাকিস্তান।