লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে রিপোর্ট পেশ হল। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে রিপোর্ট জমা দিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ‘এর দেশ, এক নির্বাচন’ কমিটির প্রধান প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রাষ্ট্রপতির কাছে ১৮ হাজার ৬২৬ পাতার রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। গত ১৯১ দিন ধরে আলোচনার পর ওই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। (One Nation One Election)
লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে প্রথম ধাপে বিধানসভা নির্বাচন এবং দ্বিতীয় ধাপে ১০০ দিনের মধ্যে পৌরসভা বা পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্পন্ন করাই লক্ষ্য কেন্দ্রের, তার জন্যই ‘এর দেশ, এক নির্বাচন’ নীতির প্রস্তাব এনেছে তারা। সেই মর্মে রাষ্ট্রপতির কাছে রিপোর্ট জমা দিল কোবিন্দ নেতৃত্বাধীন কমিটি। কবে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নীতি চালু হবে, এখনও পর্যন্ত কোনও তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। এদিন রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে রিপোর্ট জমা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রাক্তন সাংসদ তথা কংগ্রেসত্যাগী গোলাম নবী আজাদ এবং কোবিন্দ। (Lok Sabha Elections 2024)
কেন্দ্রের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কিছু বলা হয়নি, তবে রিপোর্টে একসঙ্গে সব নির্বাচন করানোর পক্ষে ওই রিপোর্টে সায় মিলেছে বলে খবর দিল্লি সূত্রে। রামনাথ নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি সর্বসম্মতিতে দেশে একসঙ্গে সব নির্বাচন করানোর পক্ষে সায় দিয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, প্রথম ধাপে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনগুলি সেরে ফেলার এবং পরবর্তী ১০০ দিনের মধ্যে পৌরসভা, পঞ্চায়েত স্তরের রাজ্যের স্থানীয় নির্বাচন সেরে ফেলার সুপারিশ করা হয়েছে রিপোর্টে।
কমিটির সুপারিশপত্রে বলা হয়েছে, একসঙ্গে সব নির্বাচন করানো গেলে, নির্বাচনী প্রক্রিয়াতেও যেমন রদবদল ঘটবে, তেমন শাসনকার্যেও বিবর্তন ঘটবে। ভারতে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে সাহায্য় করবে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’। রাজ্য নির্বাচন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জাতীয় নির্বাচন কমিটিকে দেশের সব নাগরিকের জন্য একটি মাত্র ইলেক্টোরাল রোল এবং ভোটার কার্ড তৈরি করতে পারে।
বর্তমানে দেশে লোকসভা নির্বাচন এবং বিধানসভা নির্বাচন পৃথক ভাবে সম্পন্ন হয়। এক সরকাররে কার্যকালের মেয়াদ পূর্ণ হলে, বা কোনও কারণে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটলে, পুনরায় হয় নির্বাচন। একসঙ্গে দেশের সব নির্বাচনের সপক্ষে আগাগোড়া সওয়াল করে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-র নির্বাচনী ইস্তেহারেও ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’র প্রতিশ্রুতি ছিল। যদিও এর বিরোধিতা করছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ চালু হলে, রাজ্যের স্থানীয় সমস্যাগুলি উপেক্ষিত থেকে যাবে। একসঙ্গে সব নির্বাচন হলে বড় দলগুলি যে পরিমাণ অর্থ খরচ করবে, তার সামেন মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারবে না ছোট দলগুলি। পাশাপাশি, নির্বাচনের পর পর সরকার পড়ে গেলে, কী ঘটবে, সেই নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থার উল্লেখ নেই বলেও দাবি বিরোধীদের।