সংঘর্ষবিরতি হয়েছে। এবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে আলোচনা চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বৃহস্পতিবার কামরা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে গিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান শান্তির পক্ষে। সেজন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। কিন্তু একই সঙ্গে একটি ‘কূট’ শর্তও আরোপ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, শান্তি আলোচনা যদি শুরু করতে হয়, তাহলে কাশ্মীর নিয়েও আলোচনা করতে হবে।
শরিফের এই ‘শান্তিবার্তা’ ভারত-পাকিস্তানের বর্তমান সম্পর্কের নিরিখে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তানের মদতে চলা জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জনের। এই হামলায় প্রত্যক্ষ মদত ছিল পাকিস্তানের। হামলার দায়ও নেয় লস্কর ই তইবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। এই অবস্থায় পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসের আঁতুড় ঘরে হামলা চালায় ভারত। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় জঙ্গিদের হেড কোয়ার্টার গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সেনা ও আইএসআই লালন করছিল এই সন্ত্রাসের কারখানা। সেই ঘটনার পর পাকিস্তানের হামলা ও পালটা হামলার পর বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চলছে দুই দেশের মধ্যে।
গত ১০ মে এই সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি। বৃহস্পতিবারই দুই দেশের ডিজিএমও হটলাইনে কথা বলে আগামী ১৮ মে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার দাবি করেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তিপ্রতিষ্ঠা নিয়ে এ পর্যন্ত যা যা আলোচনা সবটাই হয়েছে সবটাই সামরিক স্তরে। অসামরিক স্তরে সেভাবে আলোচনা শুরুই হয়নি। এবার সেটাই শুরু করার প্রস্তাব দিলেন শাহবাজ শরিফ।
পাক প্রধানমন্ত্রী বললেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত। কিন্তু শান্তি আলোচনার অন্যতম শর্ত হচ্ছে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান।” ভারত অবশ্য শুরু থেকেই অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। যতদিন না পাকিস্তান জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ করছে ততদিন আলোচনা সম্ভব নয়। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রকাশ্যে বলে দিয়েছেন, “টেরর (সন্ত্রাস) এবং টক (আলোচনা) একসঙ্গে চলতে পারে না।” তাছাড়া কাশ্মীর ইস্যুতেও যে আলোচনার কোনও প্রশ্ন নেই, সেটাও নয়াদিল্লি বরাবর স্পষ্ট করে আসছে। দিল্লির সাফ কথা, গোটা কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পাকিস্তান বেআইনিভাবে এর কিছু অংশের দখল নিয়ে রেখেছে। কোনও কিছু নিয়ে যদি আলোচনার জায়গা থাকে, সেটা শুধুই পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতকে ফেরত দেওয়া নিয়ে হতে পারে।