অপেক্ষার অবসান! গুনে গুনে ২২ দিন। আতঙ্কে, দুশ্চিতায় চোখের পাতা এক করতে পারেননি তিনি। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ছুটে গিয়েছিলেন খোঁজ নিতে। মানুষটি কেমন আছেন কোনও খবরই পাচ্ছিলেন না। বিনিদ্র রাত্রি কেটেছিল। প্রহর গুনছিলেন স্বামীর ফিরে আসার। অবশেষে বুধবার সকালে যখন রাস্তায় বেরিয়েছিলেন, খবর পেলেন জওয়ানকে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান। দেশে ফিরেছেন স্বামী। এখন শুধু তাঁর বাড়ি ফিরে আসার অপেক্ষায় তাঁর স্ত্রী রজনী ও পরিবার। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে রজনী বললেন, “প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। পাশে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’”
কূটনৈতিক স্তরে আলোচনায় সাফল্য পেয়েছে ভারত। অবশেষে দেশে ফিরেছেন পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে আটক বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। পূর্ণম বন্দি থাকাকালীন বিএসএফ থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় দরবার করেছিলেন তাঁর স্ত্রী রজনী। আজ, বুধবার স্বামী দেশে ফিরে আসার খবর পেয়ে স্বস্তির হাওয়া পরিবারে। রজনী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। মুখ্যমন্ত্রী ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন। চেয়ারম্যান পাশে থেকেছেন। সারা দেশবাসী এই ক’দিন পরিবারের সঙ্গে ছিলেন সকলের আশীর্বাদ এবং প্রার্থনায় স্বামী অবশেষে মুক্তি পেয়েছে। সবাইকে ধন্যবাদ।”
উল্লেখ্য, পূর্ণমকে পাকিস্তানের হাতে আটক হওয়ার পর থেকেই শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার বিএসএফের ডিজি ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেন। পূর্ণমের স্ত্রীকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মঙ্গলবারও ফোন করে পরিবারের খোঁজ খবর নেন তিনি। আশ্বাস দেন সাতদিনের মধ্যে জওয়ানকে ফিরিয়ে আনা হবে। তার মধ্যেই আজ বুধবার সকালে সাড়ে দশটা নাগাদ ওয়াঘা-আটারি বর্ডার দিয়ে ভারতীয় জওয়ানকে ফিরিয়ে দেয় পাকিস্তান। পূর্ণমের বাবা বলেন, ছেলে দেশে ফিরে এসেছে। তবে এখনই ফিরছে না। মেডিক্যাল পরীক্ষার পর ওকে বাড়িতে নিয়ে আসা হবে।”
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও হামলার পরদিন অর্থাৎ ২৩ এপ্রিল ভুল করে পাক ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছিলেন হুগলির পূর্ণমকুমার সাউ। গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন সেই সময় পাকিস্তানে রেঞ্জার্স আটক করে তাঁকে। এই রকম ঘটলে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে জওয়ানকে ছেড়ে দেওয়াটাই দস্তুর। কিন্তু ভারত পাকিস্তান সংঘাতের আবহে জটিলতা দেখা দেয়। সংঘর্ষবিরতির পর পূর্ণমের ফিরে আসা নিয়ে আশার আলো দেখা যায়। শেষে আজ বুধবার মুক্তি পেল বাংলার জওয়ান।