পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ‘কুচক্রী’ পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দেওয়ার দাবি তুলেছে দেশ। এই আবহেই এবার পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। রবিবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বার্তা দিলেন, ‘যারা দেশের বিরুদ্ধে চোখ তুলে তাকিয়েছে তাদের যোগ্য জবাব দেওয়ার দায়িত্ব আমার।’ দেশবাসীর হৃদয়ে জ্বলতে থাকা প্রত্যাঘাতের আগুন আরও উস্কে দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বার্তা, ‘দেশ যা চাইছে সেটাই হবে।’ রবিবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বায়ুসেনা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। সেখান থেকে বেরিয়ে সনাতন সংস্কৃতি জাগরণ মহোৎসবের অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখান থেকে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনায় কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে চোখ তুলে তাকালে তাদের ছেড়ে কথা বলা হবে না। শত্রুর ভাষাতেই শত্রুকে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। গোটা দেশ প্রত্যাঘাত চাইছে। দেশবাসীর সেই চাহিদা পূরণ করা হবে। দেশবাসী যা চাইছেন সেটাই হবে।” একইসঙ্গে রাজনাথ বলেন, “প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে সেনাকে সঙ্গে নিয়ে সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব আমার। ফলে এটা আমার দায়িত্ব তাদের যোগ্য জবাব দেওয়া যারা আমার দেশে আঘাত হানবে।” এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে রাজনাথ আরও বলেন, “আপনারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভালো করে চেনেন। তাঁর কাজের ধরন ও দৃঢ় সংকল্পের বিষয়েও আপনারা অবগত। ঝুঁকি নেওয়ার সাহস উনি ওনার অতীত জীবন থেকে শিখেছেন। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আপনারা যা চাইছেন সেটাই হতে চলেছে।” পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা ও ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়েছে দেশের অন্দরে। সেই আবহেই রাজনাথের এই বার্তায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় কোনও পদক্ষেপের জল্পনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। এদিকে পহেলগাঁও হামলার তদন্তে এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, ২২ এপ্রিল দুপুরে বৈসরন ভ্যালি রিসর্টে হামলা চালায় চারজন। তার মধ্যে দু’জন পাকিস্তানি। বাকি দুজন কাশ্মীরের বাসিন্দা। চারজনের স্কেচও প্রকাশ হয়েছে। এদের পথপ্রদর্শক হিসাবে আদিল ঠোকর নামের এক জঙ্গির নামও প্রকাশ করেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এর বাইরে আর কারা যুক্ত সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এনআইএ সূত্র বলছে, এই হামলার জন্য লস্করের সঙ্গে পাক সেনা এবং আইএসআই যে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে সেটার পোক্ত প্রমাণ রয়েছে। এনআইএ’র রিপোর্ট বলছে, এই হামলার নেপথ্যে অন্তত ২০ জন ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার কাজ করেছে। এই ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কাররা এখনও কাশ্মীরে সক্রিয়। অন্যদিকে, গোটা পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের তিন সেনা প্রধানের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বৈঠকও করেছেন তিনি।
