আইপিএল ফাইনাল দেখে এ কথা বলতেই পারেন কেকেআরের সমর্থকেরা। এত সহজে তৃতীয় ট্রফি তাঁরা ঘরে তুলতে পারবেন এটা কি অতি বড় কেকেআর সমর্থকও ভাবতে পেরেছিলেন? আইপিএলের অন্যতম সেরা আগ্রাসী দল ফাইনালের প্রতিপক্ষ। সেই দলে রয়েছেন অভিষেক শর্মা, ট্রেভিস হেড, হেনরিখ ক্লাসেন, প্যাট কামিন্সের মতো ক্রিকেটার। তাদের বিরুদ্ধে একটু লড়াই হবে না? শেষ বল, বা অন্তত শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ গড়াবে না?
না, হল না। বিন্দুমাত্র লড়াই দেখা গেল না হায়দরাবাদের। বোলারদের দাপট এবং হায়দরাবাদ ব্যাটারদের অসহায় মানসিকতার ফয়দা তুলল কেকেআর। আন্দ্রে রাসেল, মিচেল স্টার্কের দাপটে আগে ব্যাট করে ১১৩ রানেই শেষ হয় হায়দরাবাদের ইনিংস। জবাবে কেকেআর রান তুলে নিল ১০.৩ ওভারে। হাতে তখনও ৮ উইকেট। কম রানের পুঁজি সত্ত্বেও অর্ধশতরান করে ফেললেন বেঙ্কটেশ আয়ার। মরসুমে কেকেআরের সেরা বোলার বরুণ চক্রবর্তীকে মাত্র দু’ওভার হাত ঘোরাতে হল! আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে একপেশে ম্যাচ হল রবিবার। শুধু সেটাই নয়, সাধারণ ক্রিকেট সমর্থকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলাই যায়, যোগ্য দলই ট্রফি জিতেছে। মরসুমের শুরু থেকে যে দলটা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেছে, ট্রফি জিতেছে তারাই।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্বকাপের পর আইপিএল জিতে অধিনায়ক হিসাবে ‘হ্যাটট্রিক’ করতে পারতেন প্যাট কামিন্স। কী ভেবে যে টসে জিতে তিনি আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন, তা নিয়ে গবেষণা হতে বাধ্য। দলের ব্যাটারদের প্রতি ভরসা, বৃষ্টির ভ্রুকুটি, না কি পরের দিকে শিশির না পড়ার সম্ভাবনা— কোনটা তাঁর মাথায় ছিল বলা মুশকিল। যদি প্রথমটির কথা ভেবে থাকেন, তা হলে দিনের শেষে হাত কামড়াতেই পারেন। প্রতিযোগিতার আসল ম্যাচে তাঁর ব্যাটারেরা যে এ ভাবে ডোবাবেন, ভাবতে পারেননি কামিন্স। কম রানের পুঁজি নিয়েও বোলারেরা যে লড়াই করবেন তার উপায় নেই। শুরু থেকেই কেকেআর ব্যাটারেরা এত বেধড়ক মারতে শুরু করলেন যে, লড়াই করার সামান্য ভরসাটুকুও শুরুতেই শেষ হয়ে গেল।
প্রথম কোয়ালিফায়ারে মিচেল স্টার্কের দ্বিতীয় বলেই স্টাম্প উড়ে গিয়েছিল ট্রেভিস হেডের। স্টার্কের বিরুদ্ধে তাঁর পরিসংখ্যানও ভাল নয়। ঝুঁকি না নিয়ে অভিষেক শর্মা স্ট্রাইক নিয়েছিলেন। তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। পঞ্চম বলেই অভিষেকের অফ স্টাম্প উড়িয়ে দেন স্টার্ক। মাঝ পিচে পড়া বল বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছিল। অভিষেক ব্যাট লাইনে নিয়ে যেতে পারেননি।
দ্বিতীয় ওভারে আবার সাফল্য পায় কলকাতা। বৈভব অরোরার প্রথম তিনটি বল খেলার পর চতুর্থ বলে লেগ-বাই হয়। তখন একটি রান আউটের সুযোগ তৈরি হলেও কাজে লাগাতে পারেনি কেকেআর। পঞ্চম বলে রান হয়। ষষ্ঠ বলেই হেডকে তুলে নেন বৈভব। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দেন অসি উইকেটকিপার। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান বিপক্ষের ত্রাস সৃষ্টিকারী ব্যাটার।