ম্যাচটা ছিল বিশাখাপত্তনমে। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে সেই মাঠে কলকাতা নাইট রাইডার্স তুলল ২৭২ রান। জবাবে দিল্লির ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১০৬ রানে। সেই জয় মাঠে বসে দেখলেন নাইটদের মালিক শাহরুখ খান। তাঁর জন্ম দিল্লিতে। আর দিল্লির হার সেই দলের ডাগ আউটে বসে দেখলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। যিনি কলকাতার ঘরের ছেলে।
টস জিতে বুধবার ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেকেআরের অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার। দিল্লির অধিনায়ক ঋষভ পন্থও টস জিতলে ব্যাট করতেন বলে জানান। কেন তাঁরা ব্যাট করতে চাইছিলেন সেটা বোঝা গেল কলকাতার ইনিংস দেখে। সুনীল নারাইন শুরু থেকে ছক্কা হাঁকাতে শুরু করেন। দু’বার তাঁর ব্যাটে বল লেগে উইকেটরক্ষক পন্থের হাতে ক্যাচ গিয়েছিল। কিন্তু দু’বারই শুনতে পাননি পন্থ। এক বার রিভিউ নিতে গেলেও সময় পার হয়ে যায়, অন্য বার তো রিভিউ নিলেনই না। সেই দু’বার প্রাণ ফিরে পেয়ে ৩৯ বলে ৮৫ করে দিলেন নারাইন। সাতটি চার এবং সাতটি ছক্কা মারেন তিনি। অর্থাৎ ৭০ রান তিনি করেন শুধু বাউন্ডারি মেরে। এক সময় মনে হচ্ছিল এ বারের আইপিএলের প্রথম শতরানটি তাঁর ব্যাট থেকেই আসবে। কিন্তু মিচেল মার্শের বলে শেষ পর্যন্ত পন্থের হাতে ক্যাচ দিয়েই আউট হয়ে যান নারাইন।
ইনিংস গড়ার জন্য নারাইনের সঙ্গী ছিলেন অঙ্গকৃশ রঘুবংশী। গত ম্যাচেই দলে নেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সেই ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্স আগে বল করায় ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নেমেছিলেন ১৮ বছরের তরুণ। বুধবার ছিলেন প্রথম একাদশে। ব্যাট করতে নামলেন তিন নম্বরে। আর করলেন ৫৪ রান। দিল্লির ছেলে অঙ্গকৃশ। বুধবার সেই দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধেই করলেন অর্ধশতরান। সেই ইনিংসের পর অঙ্গকৃশ বলেন, “আমি ব্যাট করতে নেমে শুধু বল দেখছিলাম। ব্যস, আর কিছু করিনি। প্রচুর অনুশীলন করেছি। সেটার ফল পেলাম।”
নারাইন এবং অঙ্গকৃশের পর দিল্লির বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন আন্দ্রে রাসেল। আইপিএলে দিল্লির দলের হয়েই অভিষেক হয়েছিল ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের। পরে তিনি কেকেআরে যোগ দেন। পুরনো দলের বিরুদ্ধে ১৯ বলে ৪১ রান করলেন রাসেল। রিঙ্কু সিংহ ৮ বলে ২৬ রান করেন। তাঁদের ঝোড়ো ইনিংস কলকাতাকে ২৭২ রান তুলতে সাহায্য করে। দিল্লির বিরুদ্ধে বুধবার মোট ১৮টি ছক্কা মারেন কেকেআরের ব্যাটারেরা।
দিল্লি ভুগল স্পিনারের অভাবে। কুলদীপ যাদবের চোট রয়েছে। তিনি এই ম্যাচেও খেলেননি। অক্ষর পটেল ছাড়া দলে কোনও স্পিনার ছিল না দিল্লির। পেসারেরা সে ভাবে ছাপ ফেলতে পারলেন না। অক্ষরকে দিয়ে এক ওভারের বেশি করাননি পন্থ। সেই ওভারে ১৮ রান দেন অক্ষর। পেসারদের মধ্যে সব থেকে বেশি রান দেন এনরিখ নোখিয়ে। ৪ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার। কাশ্মীরের পেসার রাসিখ সালাম তিন ওভারে ৪৭ রান দেন। বাঁহাতি পেসার খলিল আহমেদ ৪ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। ইশান্ত শর্মা ২ উইকেট নেন। কিন্তু তিনি ৩ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে দেন। সব পেসারেরাই রান দেওয়ায় বিপদে পড়েন পন্থ। কোনও ভাবেই কেকেআরের রানের গতি আটকাতে পারেনি দিল্লি। কুলদীপ থাকলে ফল আলাদা হত বলে মনে করছেন অনেকে।