ইডেন গার্ডেন্সে এ বারের আইপিএলের শেষ ম্যাচ কলকাতা নাইট রাইডার্সের। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে এই ম্যাচে হারাতে পারলে প্রথম দল হিসাবে প্লে-অফ পর্বে পৌঁছে যাবেন শ্রেয়স আয়ারেরা।
ঘরের ইডেন গার্ডেন্সে শেষ ম্যাচ জিতে কলকাতা নাইট রাইডার্স পৌঁছে গেল আইপিএলের প্লে-অফে। ওয়াংখেড়েতে হারের বদলা নিতে পারল না মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে শ্রেয়স আয়ারেরা করেন ৭ উইকেটে ১৫৭ রান। জবাবে ৮ উইকেটে ১৩৯ তুললেন হার্দিক পাণ্ড্যরা। ১৮ রানে জিতল কেকেআর।
মুম্বইয়ের বোলারদের মধ্যে যশপ্রীত বুমরা ছাড়াও ভাল বল করেন পীযূষ চাওলা। ২৮ রানে ২ উইকেট চাওলার। বুমরা ২ উইকেট নিলেন ৩৯ রান খরচ করে। ৩১ রানে ১ উইকেট নুয়ান তুষারার। ২৪ রানের বিনিময় ১ উইকেট নেন অনশুল কাম্বোজ।
জয়ের জন্য ১৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী মেজাজে শুরু করেন মুম্বইয়ের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং ঈশান কিশন। বেশি আগ্রাসী ছিলেন ঝাড়খণ্ডের তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। ইডেনের ২২ গজে কেকেআরের কোনও বোলারকেই সমীহ করলেন না তাঁরা। ঈশান করলেন ২২ বলে ৪০ রান। মারলেন ৫টি চার এবং ২টি ছয়। পয়া ইডেনেও বড় রান পেলেন না রোহিত। তিনি করলেন ২৪ বলে ১৯। ১টি করে চার এবং ছয় এল তাঁর ব্যাট থেকে। রান পেলেন না সূর্যকুমার যাদব (১৪ বলে ১১), হার্দিক (৪ বলে ২), টিম ডেভিডেরা (শূন্য), নেহাল ওয়াধেরা (৩)। নারাইন, রাসেল, বরুণ চক্রবর্তীদের বল খেলতে সমস্যায় পড়লেন মুম্বইয়ের ব্যাটারেরা। কিছুটা লড়াই করলেন তিলক বর্মা। শেষ দিকে চেষ্টা করলেন নমন ধীরও। তিনি করলেন ৬ বলে ১৭। তিলক করলেন ১৭ বলে ৩২ রান।
আবহবিদদের পূর্বাভাস মিলিয়ে শনিবারের বিকালে বৃষ্টি নামে কলকাতায়। ঢেকে ফেলতে হয় ইডেন গার্ডেন্সের সবুজ গালিচা। বৃষ্টি থামার পর কলকাতা-মুম্বইয়ের খেলা শুরু করতে বেজে যায় রাত সোয়া ৯টা। ওভার সংখ্যা কমে হয় ১৬। তাতে অবশ্য বিশেষ সুবিধা হল না কেকেআরের। টানা সাত ম্যাচ টস হারলেন শ্রেয়স। বৃষ্টি ভেজা রাতে প্রথম বল নিতে দু’বার ভাবেননি হার্দিক।
ইডেনে এ বারের আইপিএলের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমে প্রথম থেকেই চাপে পড়ে যায় কেকেআর। শুরুতেই আউট হয়ে যান ফর্মে থাকা দুই ওপেনার ফিল সল্ট (৬) এবং সুনীল নারাইন (শূন্য)। এই নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৪৪ বার শূন্য রানে আউট হলেন নারাইন। রান পেলেন না অধিনায়ক শ্রেয়সও (৭)। ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া কেকেআরের ইনিংস সামাল দিলেন বেঙ্কটেশ আয়ার এবং নীতীশ রানা। তিন নম্বরে নেমে বেঙ্কটেশ করেন ২১ বলে ৪২ রান। মারেন ৬টি চার এবং ২টি ছয়। চোট সারিয়ে প্রথম ম্যাচের পর মাঠে ফেরা নীতীশের ব্যাট থেকে এল ২৩ বলে ৩৩ রানের ইনিংস। কেকেআর সহ-অধিনায়ক মারেন ৪টি চার এবং ১টি ছয়। বড় রান না পেলেও দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেন রিঙ্কু সিংহ, আন্দ্রে রাসেল, রমনদীপ সিংহেরা। রিঙ্কু করেন ১২ বলে ২০। দ্রে রাসের ব্যাট থেকে এল ১৪ বলে ২৪ রান। শেষে ৮ বলে ১৭ রান করে অপরাজিত থাকেন রমনদীপ।
এমন অবস্থায় কলকাতা দলে ফেরায় গতবারের ক্যাপ্টেন নীতীশ রানাকে। কলকাতা চলতি আইপিএলে ইতিমধ্যে ১১টি ম্যাচ খেলে ফেললেও রানা খেলেছেন মাত্র ১টি মাত্র ম্যাচ। সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে মাত্র ৯ রান সংগ্রহ করেন নীতীশ। তার পর থেকেই চোটের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হয় রানাকে। শেষমেশ দলর ১২ নম্বর লিগ ম্যাচে ফের মাঠে নামার সুযোগ মেলে তাঁর।
কেকআর রানার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারের অভাব টের পায়নি অংকৃষ রঘুবংশীর জন্য। কেননা টপ-মিডল অর্ডারে অংকৃষ কেকেআরের প্রয়োজন যথাযথ মেটাচ্ছিলেন। তবে প্লে-অফের আগে রানাকে সড়গড় হওয়ার সুযোগ দিতেই অংকৃষকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা।
প্রথমত, পরিস্থিতির নিরিখে রানাকে ফেরানোর এটাই সঠিক সময় কেকেআরের। তবে রঘুবংশীকে বসিয়ে দেওয়া যথাযথ কিনা, সেই বিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। অংকৃষ লখনউয়ের বিরুদ্ধে গত ম্যাচেও ৩২ রানের যোগদান রাখেন কলকাতার ইনিংসে। তিনি টুর্নামেন্টের ৭টি ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৩.২৮ গড়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করেছেন। হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন ১টি। তাঁর সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ৫৪ রানের। ১৫৫.২৩ স্ট্রাইক-রেটে রান সংগ্রহ করেছেন রঘুবংশী।