State Government employees remain grid of Central pay comission
State Government employees remain grid of Central pay comission

আগামী অষ্টম পে কমিশনের আশায় দিন গুনছেন রাজ্যের কর্মচারীরা। কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই অষ্টম পে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে, যা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতন কাঠামো ও ভাতা নির্ধারণ করবে। সাধারণত, কেন্দ্রের পে কমিশনের সুপারিশ অনুসরণ করেই রাজ্য সরকারগুলি তাদের কর্মীদের বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে। কিন্তু ত্রিপুরার ক্ষেত্রে এখনো সপ্তম পে কমিশনের পুরো সুবিধাই পায়নি কর্মচারীরা, তার ওপর অষ্টম কমিশনের অপেক্ষা শুরু হয়েছে।

কোথায় গেল ভার্মা কমিটির রিপোর্ট?

২০১৮ সালে বিজেপি সরকারের ক্ষমতায় আসার পর, রাজ্যের কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যেই অসমের প্রাক্তন মুখ্যসচিব পি.পি. ভার্মার নেতৃত্বে একটি তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। রাজ্যের অর্থ দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছিল, ৯০ দিনের মধ্যেই কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ভার্মা কমিটি রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মচারী সংগঠন, আধিকারিকদের সঙ্গে একাধিক দফায় বৈঠক করে।

মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা নিজেও কমিটির রিপোর্ট সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছিলেন বলে খবর। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই রিপোর্টে সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ ছিল কিনা? যদি থেকে থাকে তবে তা কার্যকর করা হয়নি কেন? ২০১৮ সালের জুন মাসে ভার্মা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়নি। পরবর্তী সময়ে কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়, তবুও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। আজও রাজ্যের কর্মচারীরা জানেন না, তাদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত সুপারিশ কী ছিল।

ডি.এ-বঞ্চনা!

বর্তমানে রাজ্যের কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের তুলনায় ২৩ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বঞ্চিত। রাজ্য সরকার সম্প্রতি মাত্র ৫ শতাংশ ডিএ বাড়ালেও কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বর্তমান ডিএ ৫৩ শতাংশ, যেখানে রাজ্যের কর্মচারীরা মাত্র ৩০ শতাংশ ডিএ পাচ্ছেন। কর্মচারীদের দাবি, বিজেপি-আইপিএফটি-তিপ্রা মথার যৌথ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের ডিএ বাড়ানোর বিষয়ে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী একবার জানিয়েছিলেন, রাজ্যের ২৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য ব্যয় হয়। এতে বোঝা যায়, সরকার কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে সংবেদনশীল হলেও, ডিএ বৃদ্ধির জন্য তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

অষ্টম পে কমিশনের দিকে নজর!

বামফ্রন্ট সরকারের সময়ই কেন্দ্রীয় সপ্তম পে কমিশন লাগু হয়ে গেছিল, কিন্তু তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যে তা কার্যকর করেনি। বিজেপি সরকার ক্ষমতা দখলের জন্য, সরকারি কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশনের লোভ দেখিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর তা বাস্তবায়িত করা হয়নি বলেই অভিযোগ কর্মচারীদের। তাদের অভিমত, সপ্তম পে কমিশনের নামে তাদের প্রতারিত করা হয়েছে

এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার অষ্টম পে কমিশন গঠনের ঘোষণা করায় এখন কর্মচারীরা তাকিয়ে রয়েছেন নতুন বেতন কাঠামোর দিকে। তবে সপ্তম পে কমিশনের সুবিধা পুরোপুরি না পাওয়া কর্মচারীদের মধ্যে আশঙ্কা, অষ্টম পে কমিশনের সুপারিশ রাজ্যে কার্যকর হবে কি না। ত্রিপুরার কর্মচারীদের জন্য বকেয়া ডিএ এবং সপ্তম পে কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পাওয়াই এখন মূল দাবি। তবে সরকার সেই বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখার বিষয়। ভার্মা কমিটির রিপোর্ট আদৌ প্রকাশ্যে আসবে কিনা, তাও সময়ই বলবে। এরই মধ্যে, কর্মচারীরা নতুন পে কমিশনের আশায় দিন গুনছেন।