কৈলাসহরের বাঁধ সংস্কারের কাজে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীদের বাঁধা। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীদের বাঁধার ফলে বিগত তিন চার দিন ধরে কৈলাসহরের বাঁধের সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। এই বাঁধার ফলে আসন্ন বর্ষায় ঊনকোটি জেলার জেলাসদর কৈলাসহর বন্যায় জলমগ্ন থাকবে এটা নিশ্চিত। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীদের বাঁধার ফলে বাঁধের সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে চাউর হতেই গোটা ঊনকোটি জেলায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। উল্লেখ্য, কৈলাসহরের মনু নদীর পাড়ের বাঁধ সংস্কারের কাজ বিগত এক মাস পূর্বে শুরু হয়েছে। কৈলাসহরের পুর পরিসদের বিদ্যানগর, দূর্গাপুর, সোনামারা, গোবিন্দপুর, শ্মশান ঘাট প্রভৃতি এলাকা সহ সফরকান্দি, লাটিয়াপুড়া, রাংগাউটি, মাগুরুলি ইত্যাদি গ্রামীণ এলাকা গুলোর মনু নদীর পাড়ের বাঁধ দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হয়নি। অবশেষে রাজ্য সরকারের বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের পক্ষ থেকে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে বিগত এক মাস থেকে। কাজ শুরুর প্রথমদিকে কেউ কোনো বাঁধা না দেয়নি। অন্যদিকে, কৈলাসহর শহরের একমাত্র শ্মশান ঘাটটি ভারত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তের পাশেই অবস্থিত। এবং এই শ্মশান ঘাটটি বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পূর্বেই ও মুক্তি যুদ্ধেরও পূর্ব থেকে কৈলাসহর মহকুমার মানুষ এই শ্মশান ঘাটটি ব্যবহার করে আসছেন। তাছাড়া মনু নদীর পাড়ের বাঁধের উপর দিয়েই এই শ্মশান ঘাটটিতে যাওয়া আসা হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক কালে যখন কৈলাসহরের সব অঞ্চলের মনু নদীর বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে এবং একইসাথে কৈলাসহর শহরের শ্মশান ঘাট এলাকার মনু নদীর বাঁধ সংস্কারের কাজও শুরু হয়। কয়েকদিন কাজ করার পর বিগত চার পাঁচ দিন পূর্বে হঠাৎ করে কাজ চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা শ্মশান ঘাট এলাকায় বাঁধ সংস্কারের কাজে বাঁধা দেয় এবং শ্রমিকদের ধমক দিয়ে জোর করে সম্পুর্ন অবৈধভাবে কাজ বন্ধ করে দেয়। এই বাঁধার ফলে কাজটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। এই শ্মশান ঘাটের বাঁধ তাড়াতাড়ি সংস্কার করা না হলে আসন্ন বর্ষায় গোটা কৈলাসহর শহর বন্যায় জলমগ্ন হয়ে পড়বে। এভাবে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা কাজ চলাকালীন সময়ে জোর করে শ্রমিকদের ধমক দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পর স্থানীয় বি.এস.এফ কর্তৃপক্ষ স্থানীয় মহকুমা প্রশাসনের নজরে নেন। পরবর্তী সময়ে কৈলাসহরে মহকুমাশাসক প্রদীপ সরকার স্থানীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রনজয় দেববর্মাকে লিখিত ভাবে জানান। মহকুমাশাসকের লিখিত আদেশ পাবার পর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রনজয় দেববর্মা সাথে সাথেই উনি উনার দপ্তরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের লিখিত ভাবে জানিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে কৈলাসহর পুর পরিসদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায় এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রনজয় দেববর্মা সহ পুর পরিসদের স্থানীয় কাউন্সিলর মানষী ভট্টাচার্য, সিদ্ধার্থ রায় সহ প্রশাসনের একটি দল শ্মশান ঘাট এলাকার বাঁধ পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন কারীরা পরিদর্শনে গিয়ে কর্তব্যরত বি.এস.এফ জওয়ানদের সাথে আলোচনা করে নিশ্চিত হন যে, বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীদের বাঁধার ফলেই বাঁধ সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। এব্যাপারে কৈলাসহর পুর পরিসদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায় জানান যে, কৈলাসহর শহর তথা গোটা কৈলাসহর পুর পরিসদ এলাকার একমাত্র এই শ্মশান ঘাট। কয়েক দিন বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরুর বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীদের বাঁধা ফলে বাঁধের সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কয়েদিন বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিপাতের ফলে বাঁধের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে রয়েছে। তাছাড়া, বাঁধের উপর চলাচলের অযোগ্য হয়ে যাওয়ায় শহরের মানুষরা শ্মশান ঘাটে মৃতদেহ আনতে পারছে না।খুব শীঘ্রই বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করতে হবে বলেও জানান এবং এভাবে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা আমাদের ভারতের বাঁধ সংস্কারের কাজ বন্ধ করে দিতে পারে না। বাংলাদেশের সরকার কিংবা বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা বুঝতে পারছে না যে, কার সাথে কি করছে? ভারত সরকার কিংবা ত্রিপুরা সরকার নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করছে তা কিন্তু নয়। ৪৬ বছর পূর্বে এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিলো। দীর্ঘদিন বাঁধ সংস্কার না করায় বাঁধ খানিকটা দুর্বল হয়ে যায়। এরজন্যই বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ম মেনে সম্পুর্ন বৈধভাবে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করেছিলো। আর, এই বাঁধ সংস্কার করার শুরুতেই বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা জোর করে কাজ বন্ধ করে দেয়। অথচ, কয়েক মাস পূর্বে কৈলাসহরের রাংগাউটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে দেবীপুর এলাকায় ভারত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তের পাশেই সম্পুর্ন অবৈধভাবে বাংলাদেশে সরকার রাতের অন্ধকারে বড় বাঁধ নির্মাণ করেছিলো।

Border guards obstruct road repair work! The incident took place in the Kailashahar–Bangladesh border area.