জল বহুদূর গড়িয়েছে। তিপরা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ অনশন মঞ্চ ছেড়ে দিল্লি যাওয়ার ৪৮ ঘন্টা পর রাজ্য থেকে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা, এডিসি -র চেয়ারম্যান জগদীশ দেববর্মা, শরিকদল আইপিএফটি -র নেতৃত্ব তথা মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, রাজ্যের মুখ্য সচিব জে কে সিনহা, তিপরা মথার নেতা বৃষকেতু দেববর্মা সহ এক ঝাঁক নেতৃবর্গ শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
এদিন সিরিয়াস মুডে একে একে সকলে এম বি বি বিমান বন্দরে পৌছায়। কেউই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চায় নি। ধারণা করা হচ্ছে দিল্লিতে প্রশাসনিক কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। কারণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই সাংবিধানিক দাবি নিয়ে লড়াই আন্দোলনে অনড় রয়েছেন প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন।
লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার আগে মথার জটিল ইস্যু সমাধান করতে চাইছে দিল্লি। না হলে রাজ্যে পৌঁছে আসন নিয়ে বিপাকে পড়তে পারে শাসক দল। ইতিমধ্যে জনজাতিদের সাংবিধানিক দাবি নিয়ে বহুবার দিল্লি গেছেন প্রদ্যুৎ।
কিন্তু সমস্যার সুরাহা হয়নি। শেষ পর্যন্ত গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আমরণ অনশনে বসে ছিলেন প্রদ্যুৎ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় অনশনে বসার এক ঘণ্টার মধ্যে দিল্লি থেকে নাকি প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মনের কাছে ফোন আসে। তারপর দলের কর্মী সমর্থকদের অনশন মঞ্চে বসিয়ে রেখে দিল্লি উড়ে যান তিনি। তারপর গত ৪৮ ঘন্টা চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারলো না শাসক বিরোধী উভয়ে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার পর দুই দলের আকাশে কালো মেঘ ঘনিয়েছে বলা চলে। যার দরুন দিল্লির তলবে রাজ্য থেকে ছয়লাপ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ শাসক বিরোধী উভয় দলের।
সূত্রে খবর তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ, মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা, এডিসি -র চেয়ারম্যান জগদীশ দেববর্মা, শরিকদল আইপিএফটি -র নেতৃত্ব তথা মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, রাজ্যের মুখ্য সচিব জে কে সিনহা, তিপরা মথার সভাপতি বিজয় রাঙ্খল এবং বৃষকেতু দেববর্মা সহ এক ঝাঁক নেতৃত্ব সাথে আলোচনার টেবিলে বসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিষয়টি পুরোপুরিভাবে বিধানসভা নির্বাচনের মতোই জল ঘোলা হচ্ছে। কারণ বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার কয়েকদিন আগে একইভাবে দিল্লি নিয়ে গিয়ে প্রদ্যুৎ -কে ম্যানেজ করা হয়েছিল। তারপর রাজ্যে ফিরে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বিরোধী ভোট ভাগাভাগি করেছিল তিপ্রা মথা। এতে জয় হাসিল হয় বিজেপির।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আগে রাজ্যের দুটি আসনের জন্য একই পথ অনুসরণ করতে চলেছে দিল্লি। কিন্তু ২৮ ফেব্রুয়ারি অনশন মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রদ্যুৎ বলে গিয়েছিলেন এবার তিনি আর খালি হাতে ফিরবেন না। জনজাতিদের সাংবিধানিক দাবি নিয়ে রাজ্যে ফিরবেন। এখন দেখার বিষয় শাসক বিরোধী অংক কষাকষিতে কি ফলাফল আসে। তবে শাসক বিরোধী উভয় দলের যে এক প্রকার ভাবে বোঝাপড়া চলছে সেটা কোনোভাবে অস্বীকার করার নয়। এমনটাই রাজনৈতিক মহলের অভিমত।