পার্শ্ববর্তী রাজ্যে অতিবৃষ্টিতে রেল পরিষেবার উপর বিঘ্নিত হয়েছে। তারপরে গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যে জ্বালানি তেলের সংকট চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে পেট্রোল এবং ডিজেল বিক্রির উপর পেট্রোল পাম্পগুলিতে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করেছে। কিন্তু কয়েকদিন কেটে গেলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার নাম নিচ্ছে না। তাই অবশেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে।
কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের সংকট স্বাভাবিক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তিনি। এবং গোটা বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী দপ্তর সূত্রের খবর। এদিকে পেট্রোল পাম্প গুলিতে দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়ে আছে। দ্বিচক্র যান গুলির ২০০ টাকার তেল মিলছে। একইভাবে বিভিন্ন গাড়ির জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে জ্বালানি তেলের পরিমাপ। পেট্রোল পাম্প সূত্রের খবর রাজ্যে রেলের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আসে। কারণ রেলের মাধ্যমে পেট্রোল ও ডিজেল রাজ্যে আসে। রেলপথের মাধ্যমে পেট্রোল এবং ডিজেল আসলে একদিকে যেমন আর্থিক ব্যয় কম হয়, অপরদিকে সময় কম লাগে। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে প্রবল বৃষ্টিতে রেল পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। রাজ্যে সৃষ্টি হয়েছে জ্বালানি তেল সংকট। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার নাম না নেওয়ায় এখন মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হচ্ছে। এখন দেখার কত দ্রুত রাজ্যে জ্বালানি সংকটের সমস্যার সমাধান হয়। এদিকে রাজধানীর গনরাজ চৌমুহনীস্থিত পেট্রোল পাম্পে।
পেট্রোল পাম্প থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূর পর্যন্ত দেখা যায় যান চালকদের লাইন। এই নিয়ে রীতিমতো এক প্রকার ক্ষোভ উগড়ে দেন যান চালকরা। পেট্রোলের জন্য লাইনে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি জানান সকাল ১১ টায় লাইনে দাড়িয়ে দুপুরে দেড়টা পর্যন্ত পেট্রোল মিলেনি। সরকার বলছে তেলের কোন সঙ্কট নেই। তাহলে তেল কোথায় এই প্রশ্ন উত্থাপন করেন তিনি। অপর এক ব্যক্তি জানান খোলা বাজারে পেট্রোল বিক্রয় হচ্ছে প্রতি লিটার ২০০ টাকা।
এইটা প্রশাসনের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা বলেও দাবি করেন তিনি। উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন রেশনিং ব্যবস্থা চালু করেছে ঠিক আছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই রেশনিং ব্যবস্থা নিয়ে। দেখা যায় একই ব্যক্তি লাইনে দাড়িয়ে একই পাম্প থেকে দিনে একাধিকবার পেট্রোল সংগ্রহ করছে। আবার কোন ব্যক্তি একই দিনে একাধিক পাম্প থেকে পেট্রোল সংগ্রহ করছে। তাহলে এই রেশনিং ব্যবস্থার কি অর্থ থাকে। যদি রেশনিং ব্যবস্থা করতে হয় তাহলে এমন ভাবে করা হোক যেন এক ব্যক্তি দিনে সমগ্র রাজ্যের যে কোন একটি পাম্প থেকে একবার পেট্রোল সংগ্রহ করতে পারে। প্রশাসনের এই উদাসীনতার কারনে ভগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারন মানুষ থেকে সকল অংশের মানুষকে। দেখা যায় বাইক নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পেট্রোল সংগ্রহ করতেই গোটা দিন চলে যাচ্ছে।
প্রশাসনের এই ব্যর্থতার কারনে সাংবাদিকদেরকেও নাজেহাল হতে হচ্ছে। কারন সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য সাংবাদিকদের গোটা দিন এদিক ওদিক ছুটতে হয়। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের পেট্রোল বেশি প্রয়োজন হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ২০০ টাকার পেট্রোল সংগ্রহ করতে গোটা দিন চলে যাচ্ছে। আর এই ২০০ টাকার পেট্রোল দিয়ে সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে সঠিক সময়ে যেতে পারছে না। খোলা বাজারে ২০০ টাকা এক লিটার পেট্রোল বিক্রয়ের ঘটনা থেকে স্পষ্ট প্রশাসন উদ্ভুত পরিস্থিতি মকাবেলা করতে ব্যর্থ। কারন পেট্রোল সঙ্কট থাকলে খোলা বাজারে কোথা থেকে আসছে পেট্রোল।