2০১৮-১৯ সালের অপসংস্কৃতি আবারো ফিরতে শুরু করেছে রাজ্যে। কি দিন, কি রাত বাইক বাহিনী, হেলমেট বাহিনী ও বহিরাগতদের দ্বারা চলতো মানুষের বাড়ি-ঘরে হামলা হুজুতি। কিন্তু মানিক সাহা নেতৃত্বে সরকার গঠন হওয়ার পর থেকে সেই অপসংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়েছে রাজ্য থেকে। কিন্তু সদ্য লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকে আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে হেলমেট বাহিনী, বাইক বাহিনী এবং বহিরাগতরা।
মঙ্গলবার রাতে সিপিআইএম দলের সমর্থক রাজধানীর পূর্ব শিবনগরস্থিত উদিচি ক্লাব সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মনিষ ঘোষের বাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতিরা। মনিষ ঘোষের বাড়ি লক্ষ্য করে রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতিরা ইট পাটকেল ছুড়ে। ভেঙ্গে দেওয়া হয় বাড়ি ঘরের কাচের জানেলা। বাড়ির মালিক জানান, তিনি সিপিআইএম দলের কর্মী হওয়ার কারনে তারা বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। ইতিপূর্বে ওনার বাড়িতে এই ধরনের হামলা চালানো হয়নি। এই প্রথম ওনার বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। রাতেই ঘটনাস্থলে পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশ ছুটে যায় বলে জানান বাড়ির মালিক। অভিযোগের তীর শ্যাম দে, অরুপ সরকার নামে শাসক দলের দুই দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে। তাদের বাড়ি এমবিবি লেইক সংলগ্ন এলাকায়। তারা বহিরাগতদের নিয়ে এসে এই ঘটনা সংঘটিত করেছে বলে অভিযোগ মনিষ ঘোষের।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার সকালে মনিষ ঘোষের বাড়িতে ছুটে যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ সিপিএইএম দলের নেতৃত্বরা। মানিক সরকার মনিষ ঘোষের বাড়ি ঘুরে দেখেন। কথা বলেন বাড়ির লোকজনদের সাথে। তারপর তিনি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শাসক দলকে কাঠগড়ায় তুলেন। তিনি বলেন এইটা বিজেপির দুর্বলতা। এইটা শক্তির লক্ষণ নয়। তারা জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা বাছাই করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সংগঠন, নেতৃত্ব, কর্মীদের বাড়ি ঘরে হামলা চালানো হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শাসকদল বিজেপি এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত করছে। সারাদেশে হারতে হারতে কোন মতে সরকার রক্ষা করেছে। তারপরও সবাইকে নিয়ে ৩০০ -র গণ্ডি পার করতে পারেনি এন ডি এ। রাজ্যে দুটি আসনে তারা মানুষকে গৃহবন্দী করে ভোট প্রহসনে পরিণত করে ৭১ শতাংশের অধিক ভোটের হার নিতে পারেনি। ২৫ বছরে এমন ভোট হয়নি। এগুলি শাসক দলের দুর্বলতার লক্ষণ বলে জানান মানিক সরকার। একটি গণতান্ত্রিক দেশে বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের বাড়ি ঘরে হামলা চালানোর ঘটনা কোন ভাবে কাম্য নয়। সে যাই হোক মঙ্গলবার রাতে মনিষ ঘোষের বাড়িতে হামলা চালানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে। এলাকাবাসি এই ঘটনাকে মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। বিরোধী দলকে সমর্থন করলে কি রাজ্য ত্যাগ করতে হবে ? তাহলে গণতান্ত্রিক দেশের গণতন্ত্র কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। বেছে বেছে বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতিদের হামলা কিসের ইঙ্গিত ? কেন এই হামলা। গণতন্ত্রের জন্য শাসক বিরোধী উভয়ের প্রয়োজন। শাসকের ভুল ধরিয়ে দেবে বিরোধী। বিরোধী না থাকলে, গণতন্ত্র যে বিপন্ন হয়ে যাবে। বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুষ্কৃতিরা কি তাহলে রাজ্যের গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে দিতে চাইছে?