আগরতলা শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ব্যক্তিগত রেস্টুরেন্ট ও মিষ্টির দোকান। কোন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান হোক আর নাইবা হোক সেসব রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন বিকাল থেকে সাধারণ মানুষ ভিড় জমায়। কিন্তু সিংহভাগ মানুষ জানে না কতটা অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন ভাবে তৈরি করা হচ্ছে খাবার। গত কয়েকদিন আগে সদর মহকুমা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জমা পরার পর নড়ে চড়ে বসেন, এবং মঙ্গলবার সকালে অভিযানে যান আগরতলা শহরের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও হোটেলে।
কিন্তু অভিযানে গিয়ে চোখ চড়ক গাছ হয়ে যায় প্রশাসনিক টিমের। আগরতলার অন্যতম নামিদামি অভিষেক রেস্টুরেন্টের খাবার অত্যন্ত অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন ভাবে তৈরি করা হয়। দীর্ঘদিন পুরনো সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে খাবার। যে খাবারগুলি মানুষ খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। খাবারের নমুনাগুলো সংগ্রহ করেছে প্রশাসনিক টিম। বন্ধ করে দেওয়া হয় অভিষেক রেস্টুরেন্টের রান্নাঘর। খাবারগুলি ল্যাবে পাঠানো হবে। তারপর সদর মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিন কামান চৌমুহনি স্থিত অন্যান্য রেস্টুরেন্টেও অভিযান চালায় প্রশাসনিক টিম। অভিযানে লক্ষ্য করা যায় গত দুদিন আগের দম বিরানি, রান্না করা মাংস, চাওমিন সহ বিভিন্ন খাবার ফ্রিজের ডিপবক্সের মধ্যে রাখা। এই খাবারগুলি আজকেও তারা গরম করে মানুষকে কাছে পরিবেশন করার জন্য রেখেছিল।
এই খাবারের নমুনা গুলি সংগ্রহ করে প্রশাসনিক টিম। খাবারগুলি অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বললেই শুধু চলবে না, এ খাবারগুলি খাওয়ার পর মানুষ বড়সড়ো রোগে আক্রান্ত হওয়ার মতো ঘটনা সংঘটিত হতে পারে। তবে আগরতলা শহরের মধ্যে প্রতিদিন এ ধরনের অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন এবং নিম্নমানের খাবার সাধারণ মানুষকে পরিবেশন করে চলেছে হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ। যখন অভিযোগ ওঠে তখনই প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু নিয়মিত যদি অভিযান চালানো হতো তাহলে এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করা হতো না। পাশাপাশি এই রেস্টুরেন্ট গুলির মধ্যে খাবারের মূল্য অস্বাভাবিক বেশি। যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। খাবারের তুলনায় মূল্য অতিরিক্ত বেশি হওয়ার বিষয় নিয়েও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। সাধারণ এসির নীচে বসিয়ে মানুষের কাছ থেকে খাবার এবং বিদ্যুৎ বিলের দ্বিগুণ, তিনগুণ বিল করার কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এখন দেখার বিষয় আগরতলা শহরের মধ্যে মানুষকে ঠকিয়ে ব্যবসা করা কিছু রেস্টুরেন্ট এর বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এদিন হোটেল পার্ক লাইন সহ আরো অন্যান্য হোটেলেও অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।