সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে পূর্ব ত্রিপুরা আসনে ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী হিসেবে বামফ্রন্ট রাজেন্দ্র রিয়াং -এর নাম ঘোষণা করেছে। ৭ রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রে রতন দাসের নাম ঘোষণা করেছে। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বামফ্রন্টের আহবায়ক নারায়ন কর বলেন, একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দেশে লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। দেশের মানুষ অভাব অনটন দুঃখ-দারিদ্রতার জন্য ভুগছে। জন দুর্ভোগ বেড়েছে। অর্থনৈতিক অসাম্যতা চরমভাবে বেড়েছে। অস্বাভাবিক বেড়েছে বেকার সমস্যা। জিনিসপত্রের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই সময়ে পাহাড় সমান দুর্নীতি করে চলেছে শাসক দল। এবং নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বের সরকারের জন্য এ দুর্নীতি প্রতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছে। আর এই মুহূর্তে মানুষের দৃষ্টিশক্তি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে এ সরকারের একটাই লক্ষ্য ধর্মীয় মেরুকরণ তৈরি করা। তাই তারা মানুষকে বিভক্ত করে রাখতে এই মেরুকরণের রাজনীতিতে উঠে পড়ে লেগেছে।
এই নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের রাজত্বে দেশের সংবিধান পর্যন্ত আক্রান্ত, দেশের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চরমভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছে। একি অবস্থা রাজ্যের ক্ষেত্রেও। রাজ্যেও কি ডাবল ইঞ্জিন সরকারের কারণে কাজ ও খাদ্যের চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আর সরকার মন্ত্রীদের ছবি ছাপিয়ে প্রচার করছে। যেখানে রেগা কাজ বন্ধ হয়ে আছে। শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া পড়ে আছে। এই নিদারুন সমস্যায় রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো স্কুল কলেজগুলিতে শিক্ষক সংকট সৃষ্টি হয়ে আছে। সরকারের নিয়োগের কোন উদ্যোগ নেই। কিন্তু মানুষ ভুল বুঝে বিজেপি -র সাথে ২০১৮ সালের আগে গিয়েছিল। আরো অভিযোগ করে বলেন মন্ডলের নেতাদের দ্বারা রেগা টাকা থেকে শুরু করে ঠিকাদারি কাজ এবং চাকুরি প্রদান করা পর্যন্ত চলছে দুর্নীতি। এই দুর্নীতি সচিবালয় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ন কর। আরো বলেন, অনেক নাটক হয়েছে। বিজেপি, তিপরা মথা এবং আই.পি.এফ.টি -র সরকার চলছে। এদের নেতৃত্বে রাজ্যে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে।
আইনের শাসন নেই। সার্বিক ক্ষেত্রে ত্রিপুরা এক লজ্জা জনক স্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে বামফ্রন্ট ইন্ডিয়া জোটের সন্নিকটে এসে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। পূর্ব ত্রিপুরা আসন থেকে বামফ্রন্টের সিপিআইএম -এর হয়ে প্রার্থী হিসেবে লড়াই করবেন রাজেন্দ্র রিয়াং। রাজেন্দ্র রিয়া সিপিআইএম দলের সদস্য। অপরদিকে ৭ রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী হলেন রতন দাস। তিনি সিপিআইএম দলের পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক এবং প্রাক্তন বিধায়ক। মনোনীত দুই প্রার্থী আসন্ন নির্বাচনে ত্রিপুরা রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার করতে জনগণের আশীর্বাদ নিয়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি-কে মুখের উপর জবাব দেবে বলে আশা ব্যক্ত করেন নারায়ন কর। আরো বলেন নির্বাচন কমিশনের অতীতের ভূমিকা গৌরব উজ্জ্বল নয়। তবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের সমান সুযোগ দেওয়ার কথা মাথায় রেখে ব্যবস্থা নেবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্টের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।