ত্রিপুরা রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এখন অনেক বেশি উন্নত মানের। আগে রাজ্যে মাত্র ৪ হাজারের মতো এসএসজি (স্ব- সহায়ক) গ্রুপ ছিল। সেখানে আমাদের সরকার আসার পর এখন প্রায় ৫০ হাজারের মতো এসএসজি গ্রুপ হয়েছে। পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা বাস্তবায়নের ফলে উপকৃত হবেন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বেনিফিসিয়ারিগণ।
শুক্রবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে পিএম বিশ্বকর্মা নিয়ে আয়োজিত প্রথম রাজ্যভিত্তিক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার বার বলেন সমাজ পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা সরকারে থাকতে চাই। এটা আমাদের আদর্শও। ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সালে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে যাদের কথা কেউ কখনো ভাবেন নি প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার ঘোষণা দেন। প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। ভারতীয় অর্থনীতিতে এই শ্রম শক্তিরা হচ্ছেন বিশেষ কারিগর। দেশের অর্থনীতি ব্যবস্থার প্রবৃদ্ধিতে অসংঘটিত শ্রমিকদের বিশাল অবদান রয়েছে। মূলত এখানে ১৮টি শ্রেণীর কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে অসংঘটিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের আরো দক্ষ করে তুলতে এবং তাদের উৎপাদিত সামগ্রীগুলির মান যাতে আরো ভালো হয় এজন্য পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার সূচনা করা হয়েছে। ১৮টি শ্রেণীর মানুষের কল্যাণে এই বিশ্বকর্মা যোজনা শুরু হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর ও এর সাথে যুক্ত সমস্ত আধিকারিক, কর্মীদের বলবো তারা যেভাবে কাজ করছেন সেটা অব্যহত রাখতে হবে। আজ এই প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এমএসএমই’র মাধ্যমে এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন করার চিত্র প্রত্যক্ষ হয়েছে। পিএম বিশ্বকর্মা যোজনায় নির্বাচিত হওয়ার পরে ত্রিস্তরীয় পর্যায়ে নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর ৫ থেকে ৭ দিন তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর সেখানে দৈনিক ৫০০ টাকা করে স্টাইপেন্ড দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি স্টাইপেন্ড সহ এ্যাডভান্সড ট্রেনিংয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে। পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার সার্টিফিকেট ও আইডি কার্ড দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর স্কিল ভেরিফিকেশনের পরেই ভাউচার বা ই রুপির মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকার টুল কিট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই টুল কিটের মাধ্যমে তারা যাতে আরো দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে সেজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সফলতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ পর্ব উত্তীর্ণ হলে প্রথমে তাদের ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে আরো ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে ৫% কনসেশনাল রেটে এই সহায়তা দেওয়া হয় এবং সেটা জামানতবিহীন। প্রধানমন্ত্রী কতদূর পর্যন্ত চিন্তা করেন এক এক সময় ভাবতে অবাক লাগে। তাঁর সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াস এই বিশ্বকর্মা যোজনার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে। এতে কোয়ালিটি সার্টিফিকেট, ব্র্যান্ডিং প্রমোশন টু ই কমার্স কানেক্টিভিটি, পার্টিসিপেশন ইন ট্রেড ফেয়ার্স, এডভার্টাইজিং এন্ড পাবলিসিটি ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের সহায়তা করা হয়।
আমাদের ত্রিপুরার গ্রামীণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এখন অনেক বেশি উন্নত মানের। যেখানে মাত্র ৪ হাজারের মতো এসএসজি গ্রুপ ছিল সেখানে এখন প্রায় ৫০ হাজারের মতো এসএসজি গ্রুপ হয়েছে আমাদের সরকার আসার পর। গ্রামীণ অর্থনীতি আগের তুলনায় এখন অনেক উন্নত হয়েছে। ব্যাংক থেকে রিভলভিং ফান্ড দেওয়া হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন স্কিম থেকেও সহায়তা করা হচ্ছে। আমরা এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরার কথা বলছি। প্রধানমন্ত্রী এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের কথা বলছেন। আমি নিশ্চিত আগামীদিন এসকল প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে উপকৃত হবেন সুবিধাভোগীরা।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন রাম মাঝি, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, পিএমবি ডিভিশন, মিনিস্ট্রি অফ এমএসএমই’র ডিরেক্টর মিলিন্দ রামটেকে, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের ডিরেক্টর বিশ্বশ্রী বি সহ প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকগণ। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার লাভার্থীগণ।