রাজ্যে লোকসভা ভোটের প্রচারে এলেও একই সঙ্গে কয়েকটি সরকারি কর্মসূচিও রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। শুক্রবার আরামবাগে বেশ কয়েকটি সরকারি প্রকল্পের সূচনা করেছেন তিনি। রাজনৈতিক সভায় যাওয়ার আগে দুপুর ৩টে নাগাদ তাঁকে সরকারি কর্মসূচির মঞ্চে দেখা যায়।
মোদী বলেন, ‘‘তিন কোটি লাখপতি দিদি তৈরির সঙ্কল্প নিয়েছি। পশ্চিমবঙ্গ বিকশিত হলে ভারতও হবে। সে কারণে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে সকল আসনে কমল ফোটার প্রয়োজন।’’ তার পরেই তিনি স্লোগান দেন, ‘এই বার ৪০০ পার’।
রানিগঞ্জে কয়লাখনির কাজ ৬ বছর আগে শুরু করা হয়েছে। ১৮ হাজার কোটি টাকার কাজ। সেই কাজ আটকে রয়েছে। এই নিয়ে রাজ্যের দিকে আঙুল মোদীর।
প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘দুর্নীতিতে জর্জরিত বলেই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের বিরুদ্ধে ধর্না হয় এখানে। মোদী এ সবে ভয় পান না। আমি পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে গ্যারান্টি দিয়েছি। যাঁরা গরিবকে লুটেছেন, তাঁদের হটাতেই হবে। ’’
মোদী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ থেকে পুরসভা নিয়োগ— সব জায়গাতেই দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। গরিবদের রেশনে দুর্নীতি, সীমা দিয়ে পশুপাচার— সবেতেই দুর্নীতি করেছে। সে কারণে তৃণমূলের মন্ত্রীদের ঘর থেকে নোটের পাহাড় বার হচ্ছে। এর আগে এত বড় নোটের পাহাড় দেখেছেন? সিনেমাতেও দেখা যায় না।
পটনা, বেঙ্গালুরু, আর কোথায় কোথায় এঁরা এক সঙ্গে বসে বৈঠক করেন। অথচ কংগ্রেস এখানকার মুখ্যমন্ত্রীর থেকে জবাব চাওয়ার সাহস করেননি। সন্দেশখালির এই বোনদের মতামত এক বারও দেখা হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস যা বলেছে, শুনলে চমকে যাবেন। কংগ্রেসের সভাপতি বলেছেন, বাংলায় এ সব চলতেই থাকে।’’
মোদীর কথায় উঠে এল সন্দেশখালির প্রসঙ্গ। ‘মহিলাদের নির্যাতন’ নিয়ে সরব হলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যা হচ্ছে, তা দেখে রামমোহন রায়ের আত্মা কাঁদছে। যাঁর জন্ম হয়েছিল এই খানাকুলে।
মোদীর কথায় উঠে এল অযোধ্যার মন্দির প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, এত বছর পর ঘর পেল রামলালা। পশ্চিমবঙ্গে যে ভাবে তাঁর স্বাগত জানানো হয়েছে, তা দেশ দেখেছে।
মোদী বলেন, গত ১০ বছরে ভারত অর্থনীতিতে ১১ নম্বর থেকে উঠে পাঁচ নম্বরে এসেছে। জি-২০তে জয়জয়কার হয়েছে দেশের। যা কেউ করতে পারেনি, তা চন্দ্রযান করেছে। ভারত করে দেখিয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে এলপিজি বটলিং প্ল্যান্ট চালু হলে কর্মসংস্থান হবে বলেও দাবি করেন মোদী। জানান, হাওড়া, হুগলি, কামারহাটি, বরানগর এলাকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে কেন্দ্রের উদ্যোগে হতে চলা বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে। রেলের উন্নয়ন সম্পর্কে মোদী বলেন, ‘‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে বরাদ্দ অতীতের তুলনায় তিন গুণ বেড়েছে। বাংলায় ১০০ স্টেশনকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে।’’ পশ্চিমবঙ্গ পাঁচটি বন্দেভারত এক্সপ্রেস পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মোদী। বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সহযোগিতায় বিকশিত ভারত গড়ার লক্ষ্য পূর্ণ হবে।’’