সোমবার রাজ্যে পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ। ঠিক তার আগের দিন রবিবার বাংলায় মেরুকরণের নতুন বিতর্ক অন্য মাত্রা পেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতায়। এই বিতর্কের সূত্রপাত অবশ্য শনিবার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মীয় সংগঠন রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ এবং ইসকন প্রসঙ্গ নিয়ে আসেন তাঁর নির্বাচনী বক্তৃতায়। সেখানে আক্রমণের সুরও ছিল। এর পরেই রাজ্য বিজেপির পক্ষে এর সমালোচনা ও পাল্টা আক্রমণ শুরু হয়। রবিবার একই বিষয় নিয়ে আরও কড়া মন্তব্য করলেন মোদী।
হিন্দু সন্ন্যাসীদের অপমান করার সাহস তৃণমূলনেত্রী কোথা থেকে পেলেন এমন প্রশ্ন তুলে পুরুলিয়ার সভা থেকে আক্রমণ শানান মোদী। তিনি সরাসরি মমতার মন্তব্যের জবাব ভোটের মাধ্যমে দিতে বলেন। পুরুলিয়ায় মোদী বলেন, ‘‘বাংলার সেবা-সংস্কৃতির প্রতি যারা কোনও শ্রদ্ধা রাখে না তাদের আপনাদের ভোটশক্তি দিয়ে এমন সাজা দিতে হবে যাতে ওরা কখনও আমাদের সন্ত, মহন্ত, মহাপুরুষদের অপমান না করতে পারে।’’ পুরুলিয়ার পরে বিষ্ণুপুরে সভা করেন মোদী। সেখানে এই বিষয়ে আরও কড়া মন্তব্য করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘আমি সরাসরি বলছি মুসলিম কট্টরবাদীদের খুশি করতেই তৃণমূল হিন্দু সন্ন্যাসীদের আক্রমণ করছে। খারাপ খারাপ কথা বলছে।
শনিবার আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের গোঘাটে সভা ছিল মমতার। সেই মঞ্চে সিপিএম জমানায় গোঘাটে সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন তৃণমূলনেত্রী। সেই প্রসঙ্গেই ওই সময়ে সিপিএমের হাতে ‘আক্রান্তদের’ সাহায্যার্থে কামারপুকুরের রামকৃষ্ণ মিশনের ভূমিকার প্রশংসা করেন মমতা। একই সঙ্গে এখনকার সন্তদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনাও করেন তিনি। মমতা বলেন, “সব সাধু সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে, কার্তিক মহারাজ।
ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করছে।’’ প্রসঙ্গত, কার্তিক মহারাজ ওরফে স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের ট্রাস্টি সদস্য। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় সঙ্ঘের যে শাখা রয়েছে সেটিকে কেন্দ্র করে তিনি বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করেন। কলকাতায় ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ছিলেন তিনি। মমতার মন্তব্যের পরে কার্তিক মহারাজ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘যেটা বলা হয়েছে সেটা অপমানজনক। আমি খুব তাড়াতাড়ি মানহানির মামলা করব।’’