আজ বিহার নির্বাচনের ফল। এনডিএ না বিরোধী শিবির, প্রতিবেশী রাজ্যে ক্ষমতা দখল করবে কে নির্ধারণ হয়ে যাবে আজ, শুক্রবার। তবে বিহারের ফল শুধু সেখানকার ভাগ্য নির্ধারণ করবে তাই নয়, পাশের রাজ্য এই বঙ্গদেশে সেই ফল দেখেই নিজেদের রণকৌশল চূড়ান্ত করতে চলেছে রাজ্য বিজেপি। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারী-শিবির। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের বিশ্বাস, বিজেপি আসলে দেখে নিতে চাইছে বিহারে এসআইআরের ফল কী হচ্ছে।
বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায় ৫০ লক্ষের কাছাকাছি মানুষের নাম বাদ গিয়েছে সেখানে। তা নিয়ে বিতর্ক চলছেই। মানুষের উদ্বেগ, আশঙ্কা, দোলাচলের ফল কতটা কীভাবে এসআইআরে পড়ছে, বিজেপির কাছে বিচার্য সেটাই। বিজেপি যদি দেখে এনডিএ জোট বিপুল ভোটে জিতে গেল, বাংলায় তাহলে তারা হইহই করে নামবে। আর যদি কোনও কারণে উলটো কিছু ঘটে, তা হলে এখন থেকেই তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দিয়ে যা বলানো হয়েছে, সেই ‘সেটিং তত্ত্ব’ প্রতিষ্ঠা করার পথে হাঁটতে নানা বিবৃতির পথে যেতে পারে শুভেন্দু-শিবির।
বিহার নির্বাচনের প্রেক্ষিতে জানা যাচ্ছে, শুভেন্দু ও সুকান্ত মজুমদারদের শিবিরের মধ্যে সম্প্রতি এ নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা হয়েছে। তৃণমূল এর মধ্যে দাবি করেছে, এসআইআর পর্বে বাংলায় বিজেপির ক্ষতিই হবে। আর একটা হলেও আসন বাড়বে তৃণমূলের।
সেক্ষেত্রে সীমানার ওপাশের রাজ্যে যদি এসআইআর ‘ক্লিক’ করে যায়, তাহলে সর্বশক্তিতে এসআইআর নিয়ে বিজেপি নামবে বাংলায়।
বাংলায় এসআইআর পর্বে বিএলএ ২ পদের লোকই পাচ্ছে না বিজেপি। কমিশনের দেওয়া তথ্যই তা বলছে। তৃণমূল সেখানে কয়েক গুণ এগিয়ে। সেই খবর দিল্লির বিজেপি নেতৃত্বের কাছেও আছে। রাজ্য বিজেপির নেতাদের এর জেরে দিল্লির প্রশ্নের মুখেও পড়তে হচ্ছে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমিক ভট্টাচার্য কার্যত হাত তুলে বলে দিয়েছেন, তিনি সবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এতদিন যাঁরা সংগঠন দেখেছেন, তাঁরাই জানবেন এসব। ফলে বাংলায় কী পরিস্থিতি হবে তা দিল্লি বুঝতেই পারছে।
এই অবস্থায় সিদ্ধান্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ২০ হাজার ভোটে বিজেপি পিছিয়ে আছে, সেই আসনগুলিকে চিহ্নিত করে যথাসম্ভব ভোট বাদ দেওয়ার টার্গেট রাখা হয়েছে। তবে গোটাটাই নির্ধারণ হবে বিহার নির্বাচনের ফলাফলের উপর দাঁড়িয়ে। সেখান থেকে ধাক্কা এলেই ‘অভিজিৎ-অস্ত্র’ নিয়ে নেমে পড়বে বিজেপি।
ইতিমধ্যে সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখ দিয়ে একাধিক আক্ষেপ, ক্ষোভের কথা বেরিয়েছে। বিশেষ সূত্রে খবর, সুকৌশলে তাঁকে দিয়ে এসব আগে থেকেই বলিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে বাংলায় যে কোনও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হলেই দিল্লির দিকে আঙুল তোলা যায়। বিহারের ফল খারাপ হলেই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের ঘাড়ে দায় দিয়ে সেই প্রচারে চলে যাবে শুভেন্দু-সুকান্ত শিবির যে, ‘আমরা লড়ে যাচ্ছি। দিল্লি কিছু করছে না, আমরা আর কত করব!’


