পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি জঙ্গিঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একাধিক ঘাঁটি। ভারতের এই প্রত্যাঘাতের পরই সব দেশের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিল পাকিস্তান।
পহেলগাঁও হামলার পরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করে ভারত। এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপও করে ভারত। তার পরেই পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপের পথে হাঁটে। ভারতীয় বিমানগুলির জন্য আকাশপথ বন্ধ করে দেয় তারা। তবে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারতের প্রত্যাঘাতের পর এ বার সব দেশের জন্যই তাদের আকাশসীমা সম্পূর্ণ বন্ধ করল পাকিস্তান৷ ৪৮ ঘণ্টার জন্য আপাতত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জারি করা নির্দেশে বলা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য পাকিস্তানে ‘নো ফ্লাই জোন‘ করা হচ্ছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। শুধুমাত্র কিছু প্রয়োজনীয় বিমানের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে!
সতর্কতামূলক পদক্ষেপের কথা বললেও পাকিস্তানের ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না সামরিক বিশেষজ্ঞেরা। ভারতের প্রত্যাঘাতের কথা স্বীকার করে পাকিস্তান। তবে তাদের দাবি, ভারতের হামলায় বেশ কয়েক জন সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও ভারতের দাবি, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কোনও পরিকাঠামোয় আঘাত হানা হয়নি। ভারতের হামলার পরেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের এই হামলার পর চুপ থাকবে না পাকিস্তান। যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। তার পর থেকেই পাকিস্তানের পাল্টা হামলার সম্ভাবনা নিয়ে সতর্কও ভারতও।
সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের যে কোনও হামলাকে এখন কেবল প্রতিশোধ হিসাবে নয়, বরং উত্তেজনা বৃদ্ধির পদক্ষেপ হিসাবে ধরা হবে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরই সীমান্তে গোলাবর্ষণের মাত্রা বাড়িয়েছে পাকিস্তান ফৌজ। বুধবার নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) পাক বাহিনীর ধারাবাহিক গোলাবর্ষণে অন্তত ন’জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্র উদ্ধৃত করে প্রকাশিত খবরে দাবি, পাক গোলাগুলিতে জখম হয়েছেন অন্তত ২৭ জন গ্রামবাসী! সেই আবহেই এ বার সব দেশের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করল পাকিস্তান। অন্য দিকে, পাকিস্তান সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরে অসামরিক বিমান চলাচল সীমিত করেছে ভারতও। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল জানিয়েছেন, পাকিস্তান অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করলে কড়া পদক্ষেপ করবে ভারত।