Bail denied of ISCKON monk Chinmay Krishna Das
Bail denied of ISCKON monk Chinmay Krishna Das

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বন্দি ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। দোষী সাব্যস্ত হলে সাজা যাবজ্জীবন জেল। তবে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশে মৌলবাদীদের হাতে নিপীড়িত হিন্দুদের হয়ে আওয়াজ তোলার জন্যই তাঁকে নিশানা করা হচ্ছে, একথা স্পষ্ট। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময়ের জামিন মামলার শুনানি হয়। তবে এই মুহূর্তে তাঁর আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ অসুস্থ হয়ে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি। তাই অন্য তিন হিন্দু আইনজীবী এগিয়ে আসেন সওয়াল করার জন্য। তবে আদালত তাঁদের যুক্তি মেনে নেয়নি। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সবুজ সংকেত দিয়ে চিন্ময় প্রভুর জামিন খারিজ করে দেন বিচারক। ফলে তাঁকে জেলেই থাকতে হবে।

গত ২৫ নভেম্বর বিকালে ইসকনের সন্ন্যাসীকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ২৬ তারিখ চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয় তাঁকে। আনা হয় রাষ্ট্রদোহ মামলা। শুনানি শেষে জামিন খারিজ হয়ে যায় চিন্ময় প্রভুর। এরপর হামলার মুখে পড়ে আইসিইউ-তে ভর্তি হতে হয় তাঁর আর এক আইনজীবীকে। এই গ্রেপ্তারি নিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন হিন্দুরা। কড়া বার্তা দেয় ভারতও। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। প্রায় দেড় মাস হয়ে গেলেও গারদের পিছনেই রয়েছেন চিন্ময় প্রভু। গত ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর শুনানি ছিল। কিন্তু ‘প্রাণভয়ে’ ৫১ জন আইনজীবী দলের কেউই চিন্ময়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করতে আসেননি। ফলে পিছিয়ে যায় জামিন মামলার শুনানি। পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয় ২ জানুয়ারি।

এর মাঝেই হিন্দু সন্ন্যাসীকে জেলবন্দি করে রাখতে নানা ফন্দি আঁটে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার! কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট সংবাদমাধ্যমে দাবি করে, চিন্ময় প্রভুর মুক্তি আটকাতে ৭০ জন হিন্দু সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যাতে কেউ তাঁর হয়ে আদালতে দাঁড়াতে না পারেন।

উল্লেখ্য, চিন্ময় কাণ্ডে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক যে আরও খাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা স্পষ্ট। পড়শি দেশে ভারত-বিদ্বেষ চরমে পৌঁছলেও আপাতত আস্থার বার্তা দিয়েছে দিল্লি। বদলা নয়, বরং কূটনৈতিক বোঝাপড়ায় আগ্রহী সাউথ ব্লক। তবে এদিন চিন্ময়ের জামিন খারিজ হওয়ায় ঘরে চাপ আরও বাড়বে মোদি সরকারের উপর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তথাকথিত হিন্দু রাষ্ট্রবাদী সরকার কেন ওপার বাংলায় হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না, সে প্রশ্ন ক্রমে জোরাল হচ্ছে। ৯ ডিসেম্বর বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরির ঢাকা সফর কি তাহলে নিষ্ফলা? বিরোধীরাও কেন্দ্রের এহেন ‘নরমপন্থা’য় সরব। ফলে মৌনব্রত অবলম্বন করে দীর্ঘদিন উত্তর এড়িয়ে যেতে পারবেন না মোদি-শাহরা।