ভারতীয় সেনা, বিদেশ সচিব, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বারবার জানিয়েছেন, ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে তৃতীয় পক্ষের অস্তিত্ব নেই। এবার এনডিএ শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী এবং উপমুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একই কথা জানালেন। নমোর স্পষ্ট কথা, ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি হয়েছে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায়। সেখানে তৃতীয় কারও অস্তিত্বই নেই।
বলা বাহুল্য এই তৃতীয় পক্ষ হল আমেরিকা। সংঘর্ষবিরতির দিন থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, তাঁর মধ্যস্ততাতেই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই দেশের মধ্যেকার যুদ্ধ থেমেছে। ক’দিন আগে হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সাইরিল রামাফোসার সঙ্গে আলাপচারিতাতেও তিনি দাবি করেন, বাণিজ্যের শর্তেই ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যস্ততা তিনিই করেছেন। সূত্রের খবর, এদিন অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বলতে গিয়ে মোদি বলেন, পাকিস্তান সরাসরি সংঘর্ষবিরতির অনুরোধ জানাতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। এর মধ্যে তৃতীয় কেউ ছিল না।
গত বৃহস্পতিবার সাইরিল রামাফোসারকে ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আপনি যদি একবার দেখেন যে আমরা পাকিস্তান এবং ভারতের সঙ্গে কী করেছি। পুরো ব্যাপারটাই মিটিয়েছি। আমার মনে হয় বাণিজ্যের মাধ্যমে এটা মিটিয়ে ফেলেছি।” আরও বলেন, “আমেরিকা উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। আমি বলি, তোমরা এটা কী করছো?” এখানেই না থেমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “কারো না কারো তো শেষ গুলিটা চালানো উচিত। কিন্তু গুলিবর্ষণ খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছিল, সংঘর্ষ বড় এবং গভীর হচ্ছিল। তখন আমরা ওদের সঙ্গে কথা বলি। আপনি জানেন যে আমি কৃতিত্ব নেওয়াকে ঘৃণা করি। কিন্তু দিন দুই বাদে ব্যাপারটা ঘটে। এখন ওরা বলছে, এটা ট্রাম্পের ভুল।”
একই দিনে বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানান, ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে আমেরিকার কোনও ভূমিকা নেই। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “পাক সেনার তরফ থেকে আমাদের বার্তা পাঠানো হয়েছিল যে তারা আক্রমণ থামাতে চায়। আমরা সেই বার্তার যথোপযুক্ত উত্তর দিয়েছি।” মার্কিন ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, “আমেরিকা তো আমেরিকাতেই ছিল। তাদের বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যথাক্রমে আমার সঙ্গে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে সেটা কেবলমাত্র উদ্বেগ প্রকাশের জন্য।”